
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে কলেজছাত্র জহিরুল ইসলাম ওরফে মিঠু (২৪) হত্যা মামলায় দুই ভাইকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ময়মনসিংহে বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফারহানা ফেরদৌস এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন এলবার্ট ডেভিট রকি (২৮) ও এলবার্ট ডেভিট সেন্টু (৪৩)। তাঁরা দুজন গৌরীপুর উপজেলার বাড়িওয়ালাপাড়া মহল্লার এলবার্ট ডেভিট বাদলের ছেলে।
আদালত ও মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর গৌরীপুর পৌর শহরের পাটবাজার মোড় এলাকায় সোনার দরদামকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে গৌরীপুর সরকারি কলেজের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম নিহত হন। এ ঘটনায় নিহত মিঠুর বাবা মোখলেছুর রহমান খান বাদী হয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর একটি হত্যা মামলা করেন।
এ মামলায় গৌরীপুর পৌরসভার বাড়িওয়ালাপাড়া এলাকার এলবার্ট ডেভিড বাদলের ছেলে এলবার্ট ডেভিট রকি ও এলবার্ট ডেভিট সেন্টু এবং কচিকাচা এলাকার আবদুল হাফেজ খানের ছেলে পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক একরামুল হোসেনের (৪৭) নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ছয়জনকে আসামি করা হয়।
মামলা থেকে জানা যায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যা ছয়টার দিকে পৌরসভার বাড়িওয়ালাপাড়া এলাকার ডেভিট সেন্টু পৌর শহরের টিপু সুলতান জুয়েলার্সের দোকানে পুরোনো স্বর্ণালংকার বিক্রি করতে যান। এ সময় স সোনার দরদাম নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জের ধরে হত্যার ঘটনা ঘটে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ তদন্ত শেষে ২০২৩ সালের ১৬ মে এজাহারভুক্ত তিন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে বাদী আদালতে নারাজি আবেদন করলে আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব দেন। পিবিআই তদন্ত শেষে ২০২৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি এলবার্ট ডেভিড রকি ও এলবার্ট ডেভিড সেন্টুর বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় এবং একরামুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আদালত সেটি গ্রহণ করে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ গঠন করে বিচারিক কার্যক্রম শুরু করেন। মামলায় ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। অবশেষে আজ রায় ঘোষণা করেন আদালত।
ময়মনসিংহ আদালত পরিদর্শক পি এস এম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, পলাতক আসামি এলবার্ট ডেবিট রকি ও এলবার্ট ডেবিট সেন্টুকে ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে উক্ত ধারায় প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত আসামি দুজন ইচ্ছা করলে রায় ও দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে সাত দিনের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে আপিল করতে পারবেন।