হুমায়ুন কবির
হুমায়ুন কবির

অটোরিকশা স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার পর বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় একটি অটোরিকশা স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার পর এক বিএনপি নেতাকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁর নাম হুমায়ুন কবির। তিনি রায়পুর পৌর বিএনপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে রায়পুর পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নুর ই আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাঁকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।

এর আগে গত সোমবার রায়পুর অটোরিকশা স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে হুমায়ুন কবিরকে মারধর করেন চালক-শ্রমিকেরা। একপর্যায়ে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন তিনি। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।

দলের পাঠানো চিঠিতে হুমায়ুন কবিরকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তা তিন দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়। এতে বলা হয়, হুমায়ুনের বিরুদ্ধে সোমবার দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ উঠেছে, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে। এটি দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং কোনোভাবেই কাম্য নয়। এর আলোকে হুমায়ুন কবিরকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিকেলে হুমায়ুন কবির অটোরিকশা স্ট্যান্ডে টোল সংগ্রহকারীর কাছে চাঁদা চাইতে গেলে কিছু চালক-শ্রমিক তাঁর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে চালকেরা হুমায়ুনকে মারধর করেন। এ সময় ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যান তিনি। অটোরিকশাচালকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে চালক-মালিকদের কাছ থেকে বিএনপির আরেক নেতাসহ চাঁদা তুলে আসছেন হুমায়ুন কবির।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হুমায়ুন একটি মোটরসাইকেলের ওপরে বসে নিজেকে সিএনজি-অটো মালিক সমিতির সভাপতি পরিচয় দিয়ে পৌরসভার টোল আদায়কারী শাকিলের কাছ থেকে টাকা চাইছেন। শাকিল টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তাঁকে বলেন, এর আগে বিএনপির আরেক নেতা টাকা নিয়ে গেছেন। বিষয়টি নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে অটোরিকশা চালকেরা হুমায়ুনকে মারধর করেন ও ধাওয়া দেন।

পৌরসভার অটোরিকশা স্ট্যান্ডে চাঁদা দাবির প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রায়পুর শহরে বিক্ষোভ করেন অটোরিকশার চালক ও শ্রমিকেরা। উপজেলায় প্রায় দুই শতাধিক অটোরিকশা চলাচল করে।

চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে জানতে হুমায়ুন কবিরকে একাধিকবার ফোন করা হয়। তাঁর মুঠোফোনে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। তবে গত সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো টাকা নিইনি। চালকদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁরা আমার ওপর হামলা করেন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়।’

জানতে চাইলে রায়পুর পৌর বিএনপির সভাপতি এ বি এম জিলানী বলেন, চাঁদাবাজির মতো অন্যায় কর্মকাণ্ড বিএনপির নীতি ও আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কেউ যদি এমন কাজে জড়ায়, সেটি সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত দায়। দলীয় পরিচয়ে কেউ অপরাধ করলে তাঁকে ছাড় দেওয়া হবে না।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরেও এসেছে। স্ট্যান্ডে যাঁরা অবৈধভাবে টাকা তুলছেন বা তুলতে চাইছেন, তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় এখানে বিবেচ্য হবে না। অপরাধী যে–ই হোক, প্রমাণ মিললেই গ্রেপ্তার ও আইনের মুখোমুখি করা হবে।’