
রংপুরের বদরগঞ্জে মানিক বাহিনীর হামলায় আহত শফিকুল ইসলাম (৬০) ৩ মাস ২০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা গেছেন। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। শফিকুল ইসলামের বাড়ি বদরগঞ্জের লোহানীপাড়া ইউনিয়নের কাঁচাবাড়ি গ্রামে।
গত ৫ এপ্রিল একটি দোকানঘর দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির সাবেক নেতা ও রংপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকারের অনুসারীদের ওপর শহিদুল হক ওরফে মানিক ও তাঁর ছেলে তানভীর আহম্মেদ ওরফে তমালের নেতৃত্বে থাকা ‘মানিক বাহিনী’ হামলা চালায় বলে অভিযোগ। শহিদুল হক বদরগঞ্জের কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। ওই দিনের ঘটনায় লাভলু মিয়া নামের এক বিএনপি কর্মী মারা যান।
নিহত শফিকুল ইসলামের ভাই শফিয়ার রহমানের অভিযোগ করেন, তাঁরা মোহাম্মদ আলী সরকারের অনুসারী। ৪ এপ্রিল মানিক চেয়ারম্যানের ছেলে তানভীর আহম্মেদ ফেসবুকে মোহাম্মদ আলী সরকারকে নিয়ে উসকানিমূলক পোস্ট দেন।
এ ঘটনা জানতে ৫ এপ্রিল তাঁর ভাই শফিকুল ইসলাম বদরগঞ্জে আসে। শফিয়ারের অভিযোগ, ওই দিন তাঁর ভাই শফিকুল ইসলাম ও মধুপুর বিএনপির সমাজকল্যাণ সম্পাদক লাভলু মিয়া দোকানে পান খাচ্ছিলেন। এমন সময় মানিক বাহিনীর প্রধান শহিদুল হক ওরফে মানিক, তাঁর ছেলে তানভীর আহম্মেদ, ফিরোজ ওরফে ‘মার্ডার ফিরোজ’সহ অন্যরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে শফিকুল ইসলাম ও লাভলু মিয়াকে এলোপাতাড়ি মাথায় কোপান।
বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক (ঘটনার পর বহিষ্কৃত) হুমায়ুন কবীর প্রথম আলোকে বলেন, দিনে-দুপুরে অনেক মানুষকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। ঘটনার দিন একজন মারা গেছেন। প্রায় চার মাস চিকিৎসাধীন থেকে আরেকজন মারা গেছেন। এসব হত্যার কোনো বিচার হচ্ছে না। উচ্চ আদালতে থেকে আসামিরা জামিন নিয়েছেন। নিম্ন আদালতও সবাইকে জামিন দিয়েছে।
হুমায়ুন কবীরের প্রশ্ন, সিসি ক্যামেরার সামনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সিসিটিভির ফুটেজ থাকার পরও কীভাবে জামিন হলো? খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে শহিদুল হক মানিকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে গত ২৮ মে বদরগঞ্জে সংবাদ সম্মেলনে করে শহিদুল হক বলেন, তিনি ওই দিনের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন। এ ঘটনার পেছনে একটি স্বার্থান্বেষী মহল জড়িত। বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় আগে মামলা রেকর্ড করা হয়। এখন লাশ ময়নাতদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।