‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার’ ওপর হামলার ঘটনার বিচারের দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ । আজ দুপুরে শহীদ মিনারের সামনে
‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার’ ওপর হামলার ঘটনার বিচারের দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ । আজ দুপুরে শহীদ মিনারের সামনে

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র–জনতার’ ওপর হামলার বিচারের দাবি

ঢাকায় এনসিটিবির সামনে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার’ ওপর হামলার ঘটনার বিচারের দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এক প্রতিবাদী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে এ দাবি জানান তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই কর্মসূচি হয়।

সমাবেশে বক্তারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি ‘আদিবাসীদের’ সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ারও দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।

ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ভুবন চাকমা এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন,‘জুলাই আন্দোলন–পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও বাঙালিদের ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম। যেখানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অধিকার ও আত্মপরিচয় স্বীকৃতি থাকবে। কিন্তু এই রাষ্ট্র ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী জনগণের ওপর আরও শোষণ-নিপীড়ন চাপিয়ে দিয়েছে।’

ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অধিকারকে অবহেলা করলে সংগ্রাম আরও দীর্ঘ ও কঠোর হবে বলে মন্তব্য করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (জেএসএস–সমর্থিত হিসেবে পরিচিত) সভাপতি অন্তর চাকমা। তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ওপর হামলা পরিকল্পিত ছিল। প্রশাসনের সামনে এমন হামলা ন্যক্কারজনক। হামলার সঙ্গে জড়িত মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।  তাঁদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হব এবং সংবিধান সংস্কারের যে সুপারিশ করা হয়েছে, সেখানে ‘আদিবাসীদের’ যুক্ত করতে হবে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি পাভেল ত্রিপুরা, রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক পহেলা চাকমা,বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার ফোরামের শাখার সাধারণ সম্পাদক সুখীজয় তঞ্চঙ্গ্যা, শাখা ছাত্র ইউনিয়নের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক মোহাম্মদ সোহেল রানা প্রমুখ।

হামলার ঘটনার বিচারের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। গতকাল সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসের কাটা পাহাড় সড়কে

বাম জোটের মশালমিছিল

এর আগে গতকাল বুধবারও একই দাবিতে মশালমিছিল করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বামধারার সংগঠন নিয়ে গঠিত গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের ব্যানারে এই কর্মসূচি হয়। ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’ সংগঠনটি উগ্র সাম্প্রদায়িক উল্লেখ করে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি করেছেন তাঁরা।

মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টের গোলচত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন জোটের নেতা–কর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (ইউফিডিএফ–সমর্থিত হিসেবে পরিচিত) সভাপতি রোনাল চাকমা এই সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন৷ তিনি বলেন, ‘ঢাকার হামলা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। গত বছরের ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বরে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পাহাড়িদের ওপর সংঘটিত সাম্প্রদায়িক হামলার কোনো বিচার হয়নি। সরকারের করা তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের ঘটনা হয়েছে।’

সমাবেশে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর আহ্বায়ক জশদ জাকির বলেন,  ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’ ছাত্রলীগের কায়দায় সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের দেখলে মনে হয় না তাঁরা সবাই শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া  এই সমাবেশের সঞ্চালনা করেন।