ব্রহ্মপুত্রের তীর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান

অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে উপজেলা প্রশাসন অভিযানে গেলে ট্রাক্টর ফেলে পালিয়ে যায় বালু উত্তোলনকারীরা। শনিবার বিকেলে চিলমারীর পুরাতন মাঝিপাড়া এলাকায়
ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতার অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। শনিবার বিকেলে উপজেলার রমনা ইউনিয়নের পুরোনো মাঝিপাড়া এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমান।

এর আগে শনিবার প্রথম আলোতে ‘বালু তোলায় হুমকিতে গ্রাম’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে ক্ষমতাসীন দলের দুই নেতার বিরুদ্ধে রমনা ইউনিয়নের জোড়গাছ বাসন্তী গ্রামের কাছে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরের এক কিলোমিটার এলাকা থেকে এক মাস ধরে বালু উত্তোলনের অভিযোগ করা হয়।

শনিবার শেষ বিকেলে রমনা ইউনিয়নের পুরোনো মাঝিপাড়া এলাকায় উপজেলা প্রশাসন অভিযানে গেলে বালু ব্যবসায়ী ও চালকেরা গাড়ি ও বালু তোলার সরঞ্জাম রেখে পালিয়ে যান। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তিনটি বালু তোলার ট্রাক্টর ও বালু তোলার জিনিসপত্রের ধ্বংস করা হয়। পরে ইউএনও অবৈধভাবে বালু তোলার ব্যাপারে স্থানীয় মানুষকে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন।

ইউএনও মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র গোপনে অবৈধভাবে ব্রহ্মপুত্র নদের বালু উত্তোলন করে আসছিল। শনিবার রমনা ইউনিয়নের পুরোনো মাঝিপাড়া এলাকায় অভিযানে গেলে বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত গাড়ি ও সরঞ্জাম ফেলে তাঁরা পালিয়ে যান। গাড়িতে বালু থাকায় জব্দ করা সম্ভব হয়নি। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে স্থানীয় মানুষকে সচেতন থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদের তীরের এক কিলোমিটার এলাকা থেকে এক মাস ধরে বালু তুলছেন রমনা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ ও একই ইউনিয়নের যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুকুল মিয়া। ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পান না। তাঁরা খননযন্ত্র দিয়ে বালু তুলে একাধিক ট্রলি দিয়ে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছেন। অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় বর্ষা মৌসুমে নদের ডান তীর রক্ষা প্রকল্প, ঐতিহাসিক জোড়গাছ হাটসহ বাসন্তী গ্রাম, পুরোনো মাঝিপাড়ায় নদভাঙন হতে পারে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।