সৈয়দ এহসানুল হুদা
সৈয়দ এহসানুল হুদা

কিশোরগঞ্জ-৫

বাবার দল বিলুপ্ত করে ছেলে বিএনপিতে, মনোনয়নের আশা

কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর ও নিকলী) আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা জমে উঠেছে। বিএনপির জোটের অংশীদার বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা নিজ দল বিলুপ্ত ঘোষণা করে গতকাল সোমবার বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন।

এহসানুল হুদার বাবা সৈয়দ সিরাজুল হুদা বাংলাদেশ জাতীয় দল নামের রাজনৈতিক দলটির প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৭৮ সালে সিরাজুল হুদা রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করে হেরে যান। এহসানুল হুদা ১২–দলীয় জোটের সমন্বয়ক ছিলেন। তিনি তারেক রহমানের রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা ৩১ দফার প্রচারণায় কাজ করেন।

এ আসন থেকে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হয় বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শেখ মজিবুর রহমানকে। এর আগে ধানের শীষ প্রতীকে দুবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি হেরে যান।

স্থানীয় নেতাদের ধারণা, মূলত আসনটি থেকে ধানের শীষের চূড়ান্ত মনোনয়ন পেতে এহসানুল হুদা বাবার দল ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন।

এমন ভাবনায় এহসানুল হুদাপক্ষের দ্বিমত নেই। পক্ষটির দাবি, মনোনয়ন পাওয়ার সবুজ সংকেত পাওয়ার পরই একটি দলের বিলুপ্তি এবং নতুন দলে যোগ দেওয়ার মতো বড় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তটি আসে।

বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. শাহ আলম শুরু থেকেই এহসানুল হুদার পক্ষে মাঠে সক্রিয়। তিনি বলেন, ‘ধানের শীষের টিকিট এখন আমাদের হাতে। দল পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে এহসানুল হুদাই হলেন ধানের শীষের কান্ডারি—এ সত্য উপলব্ধি করতে পিএইচডি করার প্রয়োজন নেই।’

গতকাল বিকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে ফুল দিয়ে বিএনপিতে যোগ দেন এহসানুল হুদা। যোগ দেওয়ার পর তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে ক্রান্তিকালে আছি। সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। গণতন্ত্র উত্তোরণের পথে আমরা সংগ্রাম করেছি। আগামীর যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বিএনপিতে যোগ দেওয়ায় তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে পারব।’

এ খবরে স্থানীয় নেতা–কর্মীদের মধ্যে দেখা দেয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিএনপির একটি পক্ষ বলছে, এহসানুল হুদার বিএনপিতে আসাকে কোনোভাবেই স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছে না দলের বড় অংশ। বিশেষ করে মজিবুর রহমান পক্ষ। তাঁরা মনে করেন, দলে যোগ দেওয়া মানে মনোনয়ন পাওয়া নয়।

মজিবুর রহমানকে গতকাল রাতে এবং আজ মঙ্গলবার সকালে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। তিনি ধরেননি। কথা হয় মজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মনোনয়ন আমরা পেয়েছি, আমাদের থাকবে। এই নিয়ে দ্বিতীয় ভাবনা মাথায় আনতে চাই না।’ এহসানুল হুদার বিএনপিতে যোগদানের বিষয়টি কীভাবে দেখছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তাঁকে কোনোভাবেই মেনে নেব না।’