
ফরিদপুরের সালথায় এক কিশোরীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় তাঁর বাবা ও চাচাকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায় মোহন কুমার রায়ের (২৮) বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের সারুকদিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। আহত দুজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ওই কিশোরীর সঙ্গে চার বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেছেন সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায় মোহন কুমার রায়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই মাস আগে আমাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। কিন্তু ওই পরিবারের সদস্যরা বলে বেড়াচ্ছিলেন, আমি নাকি ওই মেয়েকে হুমকি দিচ্ছি। এ কথা শুনে তাঁদের এক বন্ধুর বাড়িতে এ বিষয়ে কথা বলতে যাই। এ সময় তাঁরা আমাকে মারধর করেন। আমি ওই মেয়ের বাবা বা চাচাকে মারিনি। তাঁরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন।’
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সাদিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘চার-পাঁচ বছর ধরে মোহন কুমার ওই কিশোরীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু কিশোরীটি তাঁকে পাত্তা দিচ্ছিল না। এটা নিয়ে আজ এক সালিসে হাতাহাতির ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে কিশোরীর বাবা, চাচা ও চাচাতো ভাই আহত হয়েছেন। শুনেছি, মোহন কুমারের মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ওই কিশোরীর চাচাতো ভাই প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর চাচাতো বোনের বয়স ১৭ বছর। সে স্থানীয় ফরিদপুর শহরের একটি ছাত্রীনিবাসে থেকে একটি সরকারি কলেজে পড়াশোনা করে।
এলাকাবাসী ও ওই কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ওই কিশোরী স্কুলে পড়ার সময় থেকে মোহন কুমার তাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। কলেজে ভর্তি হওয়ার পর তাকে হোস্টেল থেকে তুলে নেওয়ার হুমকি দিতে শুরু করেন তিনি। পরে ওই কিশোরী বিষয়টি বাড়িতে জানায়। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় একটি বাড়িতে ওই কিশোরীর বাবার সঙ্গে মোহনের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মোহন তাঁকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন।
খবর পেয়ে ওই কিশোরীর চাচা, চাচাতো ভাই ওই বাড়িতে গেলে মোহনসহ ছাত্রলীগের ১০-১২ জন তাঁদের ওপরও হামলা করেন। এতে কিশোরীর বাবা ও চাচাতো ভাই আহত হন এবং চাচার মাথা ফেটে যায়। আহত তিনজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কিশোরীর বাবা ও চাচাকে ভর্তি নেওয়া এবং চাচাতো ভাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আটঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আক্কাস মাতুব্বর প্রথম আলোকে বলেন, ওই কিশোরী স্কুলে পড়ার সময় থেকে মোহন তাকে আসা-যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। এটা নিয়ে বিদ্যালয়ে একবার সালিস বৈঠকও হয়েছে। কলেজে ভর্তি হওয়ার পর মোহন ওই কিশোরীকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছিলেন।