ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) মনোনীত প্রার্থী এমদাদুল হক নির্বাচনী খরচের জন্য সাধারণ মানুষের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আর্থিক সহযোগিতা করার জন্য আবেদন জানান।
গতকাল বেলা পৌনে দুইটার দিকে এমদাদুল হক তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ‘সাধারণ মানুষের সহায়তা নিয়ে সিপিবি পথ চলে। নির্বাচনী তহবিলে আপনার সহযোগিতা চাই। যার যা সাধ্য, সেটুকু আমরা গ্রহণ করব সম্মানের সাথে।’
এমদাদুল হক সিপিবির জেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন। তিনি ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। এর আগে ১৯৯৯ সালে ময়মনসিংহ পৌরসভার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গতকাল সদর উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে তিনি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
এমদাদুল হক বলেন, ‘আমি ২০১৮ সালের নির্বাচনেও মানুষের সহযোগিতা নিয়েছিলাম, সে সময় প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়েছিল মানুষ। তখন মানুষ এসে হাতে দিয়ে যেত। এবার বিকাশের মাধ্যমে অনুদান চেয়েছি। গতকাল থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার টাকা অনুদান এসেছে। ২০০-৫০০ যে যাঁর মতো করে অনুদান পাঠাচ্ছেন। এবার গতবারের চেয়ে বেশি অনুদান আসবে বলে আশা করছি। এবারের নির্বাচনে ১২ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করেছি।’
সিপিবির এই নেতা আরও বলেন, ‘আমি যদি কোটি কোটি টাকা খরচ করে নির্বাচন করি, তাহলে তো আমার উদ্দেশ্যই থাকবে সেখান থেকে লাভ করার। আমরা বিনিয়োগ চাই না। আমি নির্বাচনের যুদ্ধে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় টাকা দেব, জনগণ দেবে, দলের সমর্থক–শুভানুধ্যায়ীরাও দেবে। তাহলে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা থাকবে। নির্বাচনে আমি জয়লাভ করলে তা জনগণের দ্বারা ও জনগণের অর্থে জয়লাভ করা হবে। টাকা কামানো বা বিনিয়োগের পর লাভ খোঁজার চিন্তা থাকবে না। এটি হচ্ছে একটি যৌক্তিক কারণ। আমরা মনে করি না যে রাজনীতি একটি ব্যবসা, রাজনীতি থেকে আমি লাভবান হব, লাভবান হয়ে আমি আমার টাকাটা তুলব। যাতে কোনোভাবেই এই চিন্তাটা না আসে, সে কারণে নির্বাচনের এই যুদ্ধটাকে এভাবে গ্রহণ করেছি।’
এমদাদুল হকের ওই ফেসবুক পোস্টে আতাউর রহমান খান নামের একজন মন্তব্য করেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে ধনিক শ্রেণির দলগুলোর প্রার্থীরা কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা বিনিয়োগ করে সাধারণ মানুষকে পাঁচ বছর শাসন করার বৈধতা আদায় করে। আর গরিব শ্রেণির দলগুলোকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখে। এবার সাধারণ মানুষ নিজেদের পকেট থেকে টাকা খরচ করে, পরিশ্রম করে, ভোট দিয়ে নিজেদের প্রার্থীকে জয়যুক্ত করে সংসদে পাঠান। নেপাল ও শ্রীলঙ্কার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করুন। গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্টের প্রার্থীদের জয়যুক্ত করুন। সমাজতন্ত্র অভিমুখী বাম গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করুন। গরিব, শ্রমজীবী, মেহনতি, পেশাজীবী, দেশপ্রেমিক মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী তহবিলে অর্থ সহযোগিতা করুন।’