
কুমিল্লার বুড়িচংয়ে নিজ ঘর থেকে মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের জালালপুর গ্রাম থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ ধারণা করছে, অভাব-অনটন, ঋণের চাপ আর দীর্ঘদিনের অসুস্থতার জেরে ওই মা তাঁর মেয়েকে নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন
মারা যাওয়া নারীর নাম নমিতা রানী পাল (৪২) ও তাঁর মেয়ে তন্বী রানী পাল (১৮)। ঘটনার সময় মা ও মেয়ে ছাড়া তাঁদের ঘরে আর কেউ ছিলেন না বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, মা ও মেয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে ঋণগ্রস্ত ছিল। এ ছাড়া নমিতা বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতায় ভুগছিলেন। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অভাব, ঋণ ও অসুস্থতার কারণেই মা-মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হবে। নমিতার বড় দুই মেয়ের অনেক দূরে বিয়ে হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের মৃত জীবন চন্দ্র পালের স্ত্রী নমিতা রানী পালের তিন মেয়ে। এর মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়ে তন্বী রানী পাল অবিবাহিত ছিলেন। সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি ছিলেন নমিতা রানী। তিনি স্থানীয় দেবপুর স্পিনিং মিলে চাকরি করতেন। দুই মাস ধরে অসুস্থ থাকায় কাজে যেতে পারছিলেন না। এতে পরিবারের আয় বন্ধ হয়ে যায় এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটানো কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে তাঁর জন্য। এ ছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে তাঁরা চরম মানসিক চাপে ছিলেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ সকালে মা ও মেয়ে দুজনেই বিষপান করেন। প্রতিবেশীরা বিষয়টি টের পেয়ে দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
বুড়িচং থানার দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক শহিদুল্লাহ প্রধান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।