দুই সপ্তাহ পর রংপুরে ঝলমলে রোদেলা সকাল
দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভাগীয় শহর রংপুরে ১৫ দিন ধরে রোদের দেখা মিলছিল না। সেই সঙ্গে বইছিল কনকনে ঠান্ডা বাতাস। দুপুরের দিকে ঘন কুয়াশার ভেতর দিয়ে সূর্য উঁকি দিলেও রোদ ছিল না। সেই দৃশ্য আজ সোমবার পাল্টে গেছে। আজ সকালের আবহাওয়া অন্যরকম। ভোরে পুব আকাশে সূর্য ঝলমল করে দেখা দেয়।
রংপুর আবহাওয়া কার্যালয়ের কর্মকর্তা কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, রোদ উঠলেও গতকাল রোববারের থেকে তাপমাত্রা কমেছে। আজ সোমবার সকালে রংপুরের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ছিল ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে একটানা কয়েক দিনের কুয়াশা কেটে গিয়ে আকাশে রোদ উঠেছে।
আজ সোমবার সকাল সাতটা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত রংপুর নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রোদ পোহাচ্ছেন অনেকে। অনেক দিন পর এমন প্রাকৃতিক উষ্ণতায় স্বস্তি ফিরে এসেছে স্কুলগামী শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণি–পেশার মানুষের মধ্যে।
রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের সামনে সন্তানদের স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার পর প্রধান ফটকের বাইরে রোদ পোহাতে পোহাতে কথা হলো আট অভিভাবকের সঙ্গে। রুবিনা আক্তার নামের একজন অভিভাবক বলেন, ‘ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে দুপুরের দিকে সামান্য রোদ উঠলেও তেমন তাপ ছিল না। সেই সঙ্গে ছিল কনকনে ঠান্ডা বাতাস। অনেক দিন পর আজকে রোদ ওঠায় স্বস্তি পাচ্ছি।’
নগরের সর্দারপাড়া এলাকায় দেখা যায় উত্তম উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রোদের মধ্যে স্বস্তি নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। এ সময় কথা হয় কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে। সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী লুবাইয়া আক্তার বলে, ‘অনেক দিন পর আজকে স্কুলে গিয়ে ভালো লাগবে। বেশ কয়েক দিন রোদ ছিল না। ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসে হাঁটাচলা করতে কষ্ট হতো। আজকে একটু আরাম হবে।’
নগরের বুড়িরহাট সড়কে সকাল আটটা থেকে বাইসাইকেলে শ্রমজীবী মানুষের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। তবে প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে গত কয়েক দিন এমন দৃশ্য চোখে পড়েনি। কিন্তু আজ সোমবার ভোর থেকে রোদ ওঠায় শ্রমজীবী মানুষেরা কাজকর্মে ছুটে চলেছেন। একই চিত্র দেখা যায় নগরের অন্যান্য সড়কেও।
নগরের চব্বিশহাজারি এলাকায় নূর হোসেন নামের একজন দিনমজুর বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহে মাত্র পাঁচ দিন কাজে গিয়েছিলাম। আর বাইরে বের হলেও কাজেরও সংকট ছিল। আজ সকালের রোদ দেখে মনটা ভালো হলো। তাই ছুটে যাচ্ছি কাজের সন্ধানে।’
একই সঙ্গে আজ সোমবার সকালে শহরের শাপলা চত্বর, কেরানীপাড়া চারমাথা মোড়, শিমুলবাগ, বেতপট্টিসহ বিভিন্ন এলাকায় শ্রম বেচাকেনার স্থানে শ্রমজীবী মানুষের উপস্থিতিও বেড়ে গেছে। কাজের সন্ধানে ছুটে আসা মানুষজন জানান, ঠান্ডা বাতাসের কারণে কাজ করা মানুষজন কমে গেলেও আজ তাঁরা আবার ফিরে এসেছেন।