এক শিক্ষার্থীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা শুনে মাদ্রাসায় স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিড়। আজ সকালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী পৌরসভার বাটরা গ্রামে
এক শিক্ষার্থীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা শুনে মাদ্রাসায় স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিড়। আজ সকালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী পৌরসভার বাটরা গ্রামে

নোয়াখালীতে ঘুমন্ত মাদ্রাসাছাত্রকে গলা কেটে হত্যা, সহপাঠী আটক

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার একটি মাদ্রাসা থেকে এক শিক্ষার্থীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত মাদ্রাসাশিক্ষার্থীর এক সহপাঠীকে পুলিশ আটক করেছে।

নিহত শিক্ষার্থীর নাম নাজিম উদ্দিন (১৩)। সে সোনাইমুড়ী উপজেলা উপজেলার চাষীরহাট ইউনিয়নের জাহানাবাদ গ্রামের মোহাম্মদ ওবায়েদ উল্লাহর ছেলে। সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাটরা আল মাদ্রাসাতুল ইসলামিয়া মাখছুদুল উলুম মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল সে।

খুনের ঘটনায় আটক শিক্ষার্থীর বয়স ১৬ বছর। ওই কিশোরও মাদ্রাসাটির হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী। তার কাছ থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। ছুরিটি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, নাজিম উদ্দিন মাদ্রাসায় থেকে হিফজ বিভাগে পড়ালেখা করে আসছিল। গতকাল রোববার রাতেও অন্যান্য দিনের মতো সে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মাদ্রাসার একটি কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। ওই কক্ষে ১৪ জন শিক্ষার্থী থাকে। দিবাগত রাত তিনটার দিকে কারও গোঙানোর শব্দ পেয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী জেগে ওঠে। পরে তারা কক্ষের বাতি জ্বালিয়ে দেখতে পায়, রক্তাক্ত অবস্থায় নাজিমের গলাকাটা লাশ পড়ে রয়েছে। মাদ্রাসাশিক্ষকদের বিষয়টি জানানো হয়। খবর পেয়ে সকালে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, রক্তাক্ত লাশটির পাশে হাতের একটি ছাপ দেখে সন্দেহ হয়। এ সময় কক্ষে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজনকে কাঁপতে দেখায় তাকে সন্দেহবশত আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে।

ওসি বলেন, আটক ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে টুপি পরা নিয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগে নাজিম উদ্দিনের ঝগড়া হয়েছিল। মাদ্রাসাশিক্ষকেরা বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। এরপরও মনে ক্ষোভ পুষে রেখেছিল আটক কিশোর। এরই জেরে সে স্থানীয় বাজার থেকে ৩০০ টাকায় একটি ছুরি কিনে লুকিয়ে রাখে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গতকাল রাতে নাজিমকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলা কেটে হত্যা করে। হত্যার পর ছুরিটি লুকিয়ে রেখে কক্ষে শুয়ে ছিল সে।

ঘটনাস্থলে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) লোকজন রয়েছেন বলে জানিয়ে ওসি বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারের অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।