
ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থী ধ্রুবজিৎ কর্মকারের ‘আত্মহত্যার’ ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদী একটি নাটিকায় তুলে ধরা হয়েছে ধ্রুবজিতের মৃত্যুর প্রেক্ষাপট।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে একাডেমিক কম্বাইন্ড সিস্টেম বাতিল করে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত প্রচলিত একাডেমিক সিস্টেমে ফেরত যাওয়ার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত চলে এই কর্মসূচি।
নগরের রহমতপুর বাইপাস মোড় এলাকায় ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সামনের সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদী কর্মসূচি করা হয়। নাটিকায় উপস্থাপন করা হয়, পরীক্ষার হলে বিমর্ষ শিক্ষার্থীদের। সিলেবাসের বাইরে থেকে প্রশ্ন আসায় সব শিক্ষার্থীদের হাপিত্যেশ অবস্থা।হঠাৎ প্রতীকী ধ্রুবজিতের পরীক্ষার খাতা ও প্রবেশপত্র নিয়ে যান শিক্ষক। শিক্ষকের পা ধরে ফেরত চাওয়া হয় প্রবেশপত্র। কিন্তু প্রবেশপত্র ফেরত না পেয়ে নিজের হলে গিয়ে বেছে নেন আত্মহত্যার পথ।
শিক্ষার্থীরা জানান, ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হিসেবে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তাঁদের স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা ও সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চালু ছিল নিজ ক্যাম্পাসে। পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সব ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও ইনস্টিটিউটকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকনোলজি ইউনিটের আওতাভুক্ত কম্বাইন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা এবং সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চালু করে। এতে পরীক্ষার সময় এবং ফলাফল প্রকাশ করা আগের থেকে অনেক ধীর হয়ে যায়, দেখা দেয় নানা জটিলতা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ধ্রুবজিৎ কর্মকার (২৩)। তিনি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার বিজয়পুর গ্রামের মনোতোষ কর্মকার ও সুপ্তি কর্মকারের দুই ছেলের মধ্যে ছোট। গত রোববার দুপুরে কলেজের আবাসিক অমর একুশে হলের ৩০৭ নম্বর কক্ষ থেকে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শিক্ষাব্যবস্থাকে দায়ী করে এ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন।
এর আগে গত সোমবার বিকেল সাড়ে চারটায় কলেজ ক্যাম্পাসে একাডেমিক কম্বাইন্ড সিস্টেম বাতিলসহ চার দফা দাবিতে পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়। চলমান পরিস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) হিমাদ্রি শেখর চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত পত্রে সোমবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বা ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে চলমান ২০, ২১ ও ২২ মে অনুষ্ঠেয় সব পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়।