
ঝালকাঠি সদর উপজেলায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটূক্তির অভিযোগে এক তরুণকে (২১) আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত নয়টার দিকে ওই তরুণকে আটক করা হয়।
বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, আটক তরুণ পুলিশের হেফাজতে আছেন। তাঁর আইডি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এ ঘটনা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে এই তরুণকে আটকের আগে গতকাল রাতে তাঁর বাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা করে এলাকার একদল ব্যক্তি। তবে এর আগেই স্থানীয় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ওই তরুণ। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, সপ্তাহখানেক আগে তাঁর ফেসবুক আইডিটি হ্যাক হয়েছে।
পুলিশ, স্থানীয় লোকজন ও ওই তরুণের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৪ এপ্রিল ওই তরুণের ফেসবুক আইডি থেকে মহানবী (সা.)-কে কটূক্তি করে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। এটি গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন ব্যক্তি তাঁদের আইডিতে শেয়ার করেন। এ ঘটনায় স্থানীয় একদল ব্যক্তি উত্তেজিত হয়ে ওই তরুণের বাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁরা বাড়ির জানালার একটি কাচ ভেঙে ফেলেন।
খবর পেয়ে কীর্তিপাশা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনিসুজ্জামান দলীয় লোকজন নিয়ে ভাঙচুর ঠেকাতে ওই তরুণের বাড়ির সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এ নিয়ে সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ সময় ওই তরুণের মা-বাবা বাড়ির প্রধান ফটকের কলাপসিবল গেটের মধ্যে তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেখান থেকে ওই তরুণকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এ ঘটনার আগে গতকাল বিকেলে সদর থানায় গিয়ে জিডি করেন ওই তরুণ। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘২০১৭ সাল থেকে ব্যবহার করা আমার ফেসবুক আইডিতে গত ২৪ এপ্রিল বেলা ১২টা ১০ মিনিটের দিকে প্রবেশ করার চেষ্টা করি। কিন্তু আইডিতে প্রবেশ করতে পারিনি। বর্তমানে আইডিটি আমার নিয়ন্ত্রণে নেই।’
ওই তরুণের মামা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভাগনের আইডি হ্যাক হয়েছে। ফেসবুক আইডিতে নবীজিকে নিয়ে যে কটূক্তি করা হয়েছে, তা আমার ভাগনের লেখা নয়। এটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র। এ বিষয়ে আমার ভাগনে থানায় একটি জিডি করেছে।’
অন্যদিকে এ বিষয়ে মনকা নিয়ামুল বাসার নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি তাঁর ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছেন, তিন দিনের মধ্যে এ ঘটনায় পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নিলে তিনি নিজে বাদী হয়ে ওই তরুণের বিরুদ্ধে মামলা করবেন।
কীর্তিপাশা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনিসুজ্জামান বলেন, ‘আইন যাতে কেউ নিজের হাতে তুলে না নিতে পারেন, সে জন্য আমি দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে উত্তেজিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছি। এ ঘটনায় পুলিশ সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’