১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, ফুটবল ও হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া দিবসটি উদ্যাপন উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (জাকসু) ক্রীড়া সম্পাদক মাহমুদুল হাসান কিরণ।
আজ সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমান জানান, মহান বিজয় দিবসের দিন সূর্যোদয়ের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ও আবাসিক হলগুলোয় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে, এরপর সকাল সোয়া সাতটার দিকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আন্তহল চ্যান্সেলর কাপ ফুটবল (ছাত্র) এবং উপাচার্য কাপ হ্যান্ডবল (ছাত্রী) প্রতিযোগিতা শুরু হবে। এ ছাড়া বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল-দীন মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে। রাতে নিজ নিজ আবাসিক হলে হল প্রশাসনের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নতমানের খাবারের ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান তিনি।
দিবসটি উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (জাকসু) নেতৃবৃন্দ জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সকাল সাড়ে নয়টায় ক্যাম্পাসে বিজয় র্যালি বের করবেন। এরপর সকাল ১০টায় ‘মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয় দিবস’ বিষয়ে একটি চিত্রাঙ্কন ও চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন জাকসুর সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম।
এদিকে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী এককভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাকসু ক্রীড়া সম্পাদক মাহমুদুল হাসান কিরণ। গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত জাকসু নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন। তাঁর এ আয়োজনের প্রথম দিন ১৬ ডিসেম্বর সকাল ছয়টায় থাকছে ‘রান উইথ কিরণ’ শিরোনামে সাড়ে সাত কিলোমিটার দৌড় প্রতিযোগিতা। এরপর সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো কলাভবন এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের পরিবেশনায় থাকছে সাংস্কৃতিক আয়োজন ও আলোচনা। দিনব্যাপী থাকবে মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং রাত আটটায় থাকবে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী।
পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছবি চত্বর এলাকায় সকাল ১০টায় সাংস্কৃতিক আয়োজন ও আলোচনা সভা এবং দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং বই বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া ছাত্রীদের ফুটবল প্রতিযোগিতা, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ক্রিকেট প্রতিযোগিতা এবং কর্মচারীদের জন্যও ফুটবল খেলার আয়োজন থাকবে। এরপর শেষ দিন ১৮ ডিসেম্বর বিকেল চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র ‘মুক্তির গান’, ‘স্টপ জেনোসাইড’, ‘ওরা ১১ জন’ প্রদর্শিত করা হবে।
এ বিষয়ে মাহমুদুল হাসান বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি, আপামর মুক্তিকামী মানুষের সংগ্রাম স্মরণে ও রাজাকার-আলবদর প্রতিহতের আহ্বানে তিন দিনব্যাপী এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে দেশে নতুন করে যে বিতর্ক শুরু হয়েছে তার প্রতিবাদে এবং নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানাতে এ আয়োজন। মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।