
পাবনায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের এক উপসহকারী প্রকৌশলী বদলির সময় সরকারি বাসার দরজা-জানালা খুলে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে বাসাটি পরিত্যক্ত স্থাপনায় পরিণত হয়েছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।
অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার নাম ইব্রাহিম বিশ্বাস। তিনি ছয় মাস আগে পাবনা থেকে বদলি হয়েছেন। বর্তমানে রাঙামাটিতে কর্মরত।
স্থানীয় লোকজন ও গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাসাটি একতলা হওয়ায় বেশ কিছু দিন সেখানে কেউ থাকতেন না। এতে ভবনটি কিছুটা বিবর্ণ হয়ে গিয়েছিল। উপসহকারী প্রকৌশলী ইব্রাহিম বিশ্বাস পাবনায় দায়িত্ব পালনকালে বাসাটিতে থাকার ইচ্ছা পোষণ করেন। কিছু মেরামত ও রঙের কাজ করে তিনি সেখানে থাকতেন। ছয় মাস আগে রাঙামাটিতে তাঁর বদলি হয়। এ সময় তিনি বাসাটি ছেড়ে রাঙামাটিতে চলে যান। যাওয়ার সময় তিনি সরকারি বাসার কিছু আসবাবপত্র ও দরজা-জানালা খুলে নিয়ে যান।
জানামতে সরকারি সম্পদে খরচ করা যায়। কিন্তু নিয়ে যাওয়ার কোনো বিধান নেই। ওই কর্মকর্তা যে কাজ করেছেন, সেটি একটি অপরাধ।মাহবুবুল আলম, সভাপতি, ইছামতী নদী রক্ষা আন্দোলন
ইব্রাহিম বিশ্বাসের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ওটা একটা পরিত্যক্ত বাসা ছিল। তাই দরজা-জানালা খুলে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে আবার লাগানো হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, একতলা ভবনটির অবস্থা অনেকটা কঙ্কালের মতো। অবকাঠামো আছে, দরজা-জানালা কিছু নেই। ভবনের ভেতরটা পুরো ফাঁকা।
সরেজমিনে দেখা যায়, একতলা ভবনটির অবস্থা অনেকটা কঙ্কালের মতো। অবকাঠামো আছে, দরজা-জানালা কিছু নেই। ভবনের ভেতরটা পুরো ফাঁকা।
গণপূর্ত বিভাগের কয়েকজন কর্মচারীর দাবি, ভবনটিতে ওঠার সময় ইব্রাহিম বিশ্বাস কিছু মেরামতের কাজ করেছিলেন। খরচের টাকা না পাওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। পরে বদলির সময় দরজা-জানালা খুলে নিয়ে যান। এতে পুরো ভবনটি পরিত্যক্ত হয়ে গেছে।
প্রায় ছয় মাস পর বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় শহরের ইছামতী নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি ও শিক্ষক মাহবুবুল আলম বলেন, জানামতে সরকারি সম্পদে খরচ করা যায়। কিন্তু নিয়ে যাওয়ার কোনো বিধান নেই। ওই কর্মকর্তা যে কাজ করেছেন, সেটি একটি অপরাধ। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক ও কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি এ বি এম ফজলুর রহমান বলেন, সরকারি সম্পদ জনগণের সম্পদ। একজন সরকারি কর্মকর্তার এমন দায়িত্বহীন আচরণ মেনে নেওয়ার মতো নয়। এটা ক্ষমতার অপব্যবহার।
ওটা একটা পরিত্যক্ত বাসা ছিল। তাই দরজা-জানালা খুলে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে আবার লাগানো হবে।ইব্রাহিম বিশ্বাস, অভিযুক্ত কর্মকর্তা
এ প্রসঙ্গে গণপূর্ত বিভাগ পাবনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ কবির বলেন, কোয়ার্টারটি পরিত্যক্ত ছিল। ইব্রাহিম বিশ্বাস যেসব জিনিস নিয়ে গেছেন, সেগুলো দ্রুতই আবার প্রতিস্থাপন করা হবে।