
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে জনগণ শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন চায়। তারা আর আগের শাসনে ফিরে যেতে চায় না। তার প্রমাণ হলো সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া ডাকসু ও জাকসু নির্বাচন।
আজ রোববার দুপুরে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সমন্বিত মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন।
ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাফল্যের বিষয়টি তুলে ধরে জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, অতীতে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনগুলো ক্যাম্পাসসহ বিভিন্ন আবাসিক হলগুলোয় গেস্টরুম, গণরুম কালচারের নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর অকথ্য জুলুম, নির্যাতন চালিয়েছে। আবার দলের অন্তর্কোন্দলে মারামারি, অস্ত্রের ঝনঝনানিতে খুনাখুনি পর্যন্ত হয়েছে। বুয়েটের মেধাবী ছাত্রী সনি হত্যা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র আবু বকর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র শরিফুজ্জামান নোমানী হত্যা, এ রকম দেশ স্বাধীনের পর থেকে শত শত মেধাবী শিক্ষার্থী নিজ ক্যাম্পাসে হত্যার শিকার হয়েছেন। তাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা নীরব ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে লেজুড়বৃত্তিক সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের শোচনীয় পরাজয় ঘটিয়েছেন।
গোলাম পরওয়ার বলেন, দেশের মানুষ আজ সচেতন। কিসে তাদের ভালো আর কিসে তাদের মন্দ, জনগণ আজ তা ভালো করেই বোঝে। তাই তো জনগণ এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, নীরব ব্যালট বিপ্লবের মধ্য দিয়ে দেশের পুরোনো শাসনব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে নতুন একটি জনকল্যাণমুখী, কল্যাণকর বাংলাদেশ বিনির্মাণের।
জনগণ এখন আর কর্তৃত্ববাদী শাসন পছন্দ করে না উল্লেখ করে বিদ্যমান সংবিধানের পরিবর্তনের দাবিও তুলে ধরেন গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী স্পষ্ট করে বলেছে যে সংবিধানের কারণে একটা সরকার এত প্রতাপশালী হয়ে উঠেছে, এত মানুষকে হত্যা করেছে, এত মানুষকে আহত করেছে, জুলাই সনদের লিখিত স্বীকৃতির মাধ্যমে সেই সংবিধানের ন্যূনতম সংশোধন এনে তারপর নির্বাচন দিতে হবে।
সংবিধান পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে গোরাম পরওয়ার আরও বলেন, ‘এই সংবিধানের আলোকে আবার যদি নির্বাচন হয়, তাহলে যারাই ক্ষমতায় আসবে, তাদের আবার স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদী হয়ে ওঠার সুযোগ থেকে যাবে। এ কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সংবিধান সংশোধন করতে হবে, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হতে হবে। তাহলে আমরা সবাই মিলে জুলাই আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারব।’
কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মুক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে মত বিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম ও মিয়া গোলাম কুদ্দুস, ডুমুরিয়া উপজেলা নায়েবে আমির গাজী সাইফুল্লাহ ও মাওলানা হাবিবুর রহমান, ছাত্রশিবিরের খুলনা জেলা সভাপতি ইউসুফ ফকির, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ দেব প্রসাদ মন্ডল। স্বাগত বক্তৃতা দেন কলেজ অধ্যক্ষ সুভাষ চন্দ্র সরদার।