
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ২৯।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আহত ব্যক্তিদের দেখতে গিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) আমার চোখ অপারেশনের জন্য বাংলাদেশ চক্ষু হাসপাতালে গিয়েছিলাম। পরে এ ধরনের ঘটনার খবর শুনতে পাই। সিএমএইচ হাসপাতালে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে জানতে পারি, ১১ জনের মরদেহ আনা হয়েছে। আরও ১৭ জনকে আহত অবস্থায় আনা হয়েছে। সেখানে বিমানের পাইলটসহ দুজন মৃত্যুবরণ করেন।’
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, বাইরে লোকজনের ভিড়ের কারণে রোগী হাসপাতালে নিতে দেরি হয়েছে। ভিড় কম হলে আরও আগে হাসপাতালে আনা যেত। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ২৯।
এর আগে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত মোট ৩১ জন নিহত ও ১৬৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সাইদুর রহমান বলেন, আইএসপিআরের তথ্যে আরেকটি হাসপাতাল যুক্ত হয়েছে, সেটি হলো লুবানা হাসপাতাল। এখানে আসার আগে সে হাসপাতাল সম্পর্কে তথ্য নেওয়া হয়েছে। তাদের তালিকায় কোনো মৃত্যু নেই। কিন্তু তারা মুখে বলছে, সেখানে দুই শিশুকে মৃত অবস্থায় তাদের অভিভাবকেরা নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে ওই দুই শিশু কোনো হাসপাতালে না যাওয়ায় ওই তাদের রেকর্ড কোনো হাসপাতাল ব্যবস্থায় পাওয়া যাচ্ছে না। লুবানা হাসপাতালের ওই দুই শিশুর অভিভাবকদের অনুরোধ করা হচ্ছে, তাঁরা যেন নামগুলো তালিকাভুক্ত করতে সাহায্য করেন।
সাইদুর রহমান বলেন, ‘উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে একজনের মৃতদেহ সিএমএইচ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ওই সংখ্যা নিয়ে আইএসপিআরের সঙ্গে তথ্যের পার্থক্য হয়েছে। আমরা বলেছি সিএমএইচে ১৫ জনের মরদেহ ছিল, তারা বলছে সেখানে ১৬ জনের মরদেহ আছে। তথ্যের এই পার্থক্য দূর হতে হয়তো একটু সময় লাগবে।’
প্রধান উপদেষ্টা এই বিশেষ সহকারী বলেন, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এখন পর্যন্ত ৬৯ জন ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুজনকে বেডে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত অজ্ঞাতনামা ছয়টি লাশ আছে। এর মধ্যে চারজনের স্বজন এসেছেন। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে লাশ হস্তান্তর করা হবে। এ ছাড়া বাকি দুজনের এখনো স্বজনদের খোঁজ মেলেনি।
সাইদুর রহমান বলেন, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর থেকে একটি মেডিকেল টিম আজ রাতের মধ্যে ঢাকায় এসে পৌঁছাবে। এই টিমে একজন সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও দুজন নার্স থাকবেন। আগামীকাল থেকে তাঁরা আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসেবায় যুক্ত হবেন।