গ্রামীণ টেলিকম

অভিযোগের সত্যতা খুঁজতে পারে দুদক: হাইকোর্ট

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

গ্রামীণ টেলিকমের ফান্ড থেকে বিপুল অর্থ প্রতিষ্ঠানটির সহযোগী অন্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর এবং শ্রমিকদের পাওনা দাবির টাকা ট্রেড ইউনিয়ন ও তাদের আইনজীবীর হিসাবে পাঠানোর অভিযোগের সত্যতা খুঁজে বের করতে দুদক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে বলে মনে করেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক কোম্পানি বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।

তথ্য পর্যালোচনা করে ঘোষিত আদেশে বলা হয়, ঘটনাদৃষ্টে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদের কোম্পানির তহবিল পরিচালনায় কিছু অনিয়ম অবশ্যই হয়েছে। গ্রামীণ টেলিকমের তহবিল থেকে বিপুল অর্থ প্রতিষ্ঠানটির সহযোগী অন্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের অভিযোগ করেছেন আবেদনকারীরা। শ্রমিকদের টাকা (পাওনা) ট্রেড ইউনিয়ন ও তাঁদের আইনজীবীর হিসাবে পাঠানো শ্রমিক আইনের সংশ্লিষ্ট বিধানের লঙ্ঘন বলে অভিযোগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী। অভিযোগের সত্যতা খুঁজে বের করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) প্রয়োজনীয় কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া যথাযথ বলে মনে করেন আদালত। পর্যবেক্ষণসহ বিষয়টি চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করা হলো।

গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠাতা নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আইনজীবীদের তথ্যমতে, লভ্যাংশের বকেয়া পাওনাকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চেয়ে গ্রামীন টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষে গত বছর হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। এর শুনানি নিয়ে আদালত কারণ দর্শাতে নোটিশ দেন। গত ৪ এপ্রিল আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করা হয়। পরে মামলা প্রত্যাহারের শর্তে পাওনা পরিশোধ নিয়ে দুই পক্ষের সমঝোতা হয়েছে জানিয়ে আদালতে মামলা না চালানোর কথা বলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ মে না চালানোর দিক বিবেচনায় মামলা (অবসায়ন আবেদন) খারিজ হয়।

এরপর শ্রমিক–কর্মচারীদের পক্ষে নিয়োজিত আইনজীবীকে অস্বাভাবিক ফি ও ট্রেড ইউনিয়নের নেতাদের অন্যান্য খরচ গ্রামীণ টেলিকমের দেওয়া নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ আদালতের নজরে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ জুন ‘গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন বনাম গ্রামীণ টেলিকম এবং অন্যান্য’ শিরোনামে মামলাটি কার্যতালিকায় ওঠে। সেদিন আদালত সমঝোতা চুক্তি ও পাওনা পরিশোধের বিবরণী হলফনামা আকারে দাখিল করতে দুই পক্ষের আইনজীবীকে নির্দেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় গ্রামীণ টেলিকম এবং গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের আইনজীবী আদালতে পৃথক হলফনামা দাখিল করেন। শুনানি নিয়ে পর্যবেক্ষণসহ বিষয়টি আজ চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়।

শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী। তাঁর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম। গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী শুনানি করেন।