
পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর খাবার নিয়ে কাল শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘ইনডিজিনাস ফুড ফেস্টিভ্যাল’। এই প্রথম এসব জাতিগোষ্ঠীর খাবার নিয়ে কাজ করা উদ্যোক্তারা সম্মিলিতভাবে উৎসবে মিলিত হচ্ছেন। উৎসবের আয়োজন করছে, ‘আদিবাসীবিষয়ক জাতীয় পর্যায়ের সংবাদ মাধ্যম আইপিনিউজ’ ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নাগরিক উদ্যোগ। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, ১৫টির বেশি স্টলে পাওয়া যাবে পাহাড় ও সমতলের বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার ও কৃষিপণ্যের সমাহার।
এর মধ্যে হেবাং রেস্টুরেন্ট হাজির হবে পাহাড়ের চাকমা জাতিগোষ্ঠীর খাবারের নানা পদ নিয়ে। বাঁশের চোঙায় ভরে রান্না করা মুরগিকে চাকমারা ‘চুমোত গরাং’ নামে চেনে। এই ‘চমোত গরাং’সহ চাকমাদের বরা পিঠা, কলা পিঠা, সান্ন্যে পিঠা, বিন্নি হোগা, বাঁশ কোঁড়ল, শামুক ইত্যাদি খবারের আয়োজন থাকবে হেবাংয়ের স্টলে।
‘সাত মিজিল্যে’ নামে আরেকটি স্টলও থাকছে উৎসবে। অনলাইনভিত্তিক এই উদ্যোগ মূলত পাহাড়ের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর জনপ্রিয় খাবার নিয়ে কাজ করে। বাঁশ কোঁড়লের নানা রেসিপি, চুমোত গরাং, মাছহলাসহ নানা খাবার তাদের স্টলে থাকবে।
এ ছাড়া গারোদের নানা খাবার নিয়ে হাজির থাকবে ‘সারাংস কিচেন’। এটি মূলত চিকেন গপ্পা, খারি মিশ্রিত মান্দিদের নানা খাবার নিয়ে কাজ করে।
কাল সকাল ১০.টায় মিরপুর-১৩ বনফুল আদিবাসী গ্রিনহার্ট স্কুল অ্যন্ড কলেজে (বিআরটিএ অফিসের বিপরীত) উৎসবের উদ্বোধন হবে। সকাল ১০ টা থেকে উৎসব চলবে রাত ৮ টা পর্যন্ত।
দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের রাখাইন জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে উপস্থিত হবে ‘ট্র্যাডিশনাল ট্রিটস’ ও ‘তানজাং’। তারা অনলাইনেও মাছের শুঁটকি নিয়ে কাজ করে। তাই বাহারি পদের শুঁটকিও পাওয়া যাচ্ছে কালকের উৎসবে। এ ছাড়া মারমাদের খাবার নিয়ে কাজ করা ‘চিং’স কিচেন’ উপস্থিত হবে উৎসবে। ফলে মারমাদের জনপ্রিয় মুংডি ও লাকসুও পাওয়া যাবে তাদের স্টলে।
এ ছাড়া ‘সিএইচটি কুলিনারি’সহ বনফুল ‘আদিবাসী গ্রিনহার্ট কলেজের’ও নির্দিষ্ট স্টল থাকছে বলে আয়োজকেরা জানিয়েছেন। অন্যদিকে ব্যক্তিগত উদ্যোগেও পাহাড় ও সমতলের অনেকেই জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদের পণ্য নিয়ে হাজির থাকবেন। সেখানে পাহাড়ের বৈচিত্র্যপূর্ণ কাঁচামালও পাওয়া যাবে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।
উৎসবের আয়োজকদের অন্যতম আইপিনিউজের উপ-সম্পাদক সতেজ চাকমা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের বহুত্ববাদী সংস্কৃতির মধ্যে অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো নানা বাহারি খাবার। অনেক সময় দেখা যায়, আদিবাসীদের নানা খাবার নিয়ে মূলধারার বাঙালিদের মধ্যে একধরনের ভুল ধারণা কাজ করে। আমরা চাই, এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে আদিবাসীদের খাবার সবার মধ্যে পরিচয় করিয়ে দিতে ও ছড়িয়ে দিতে।’