গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের মুখপাত্র ও এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এবং এবি পার্টির শীর্ষ নেতারা আজ শুক্রবার রাতে কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয় পরিদর্শন করেন
গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের মুখপাত্র ও এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এবং এবি পার্টির শীর্ষ নেতারা আজ শুক্রবার রাতে কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয় পরিদর্শন করেন

গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের নেতারা

গণমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলা, অগ্নিসংযোগ অশনিসংকেত

গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলা, অগ্নিসংযোগ খুবই অশনিসংকেত। জাতীয় নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে এ ধরনের কারসাজি হতে পারে। সরকার যদি অগ্নিসন্ত্রাসীদের প্রতি পক্ষপাত করে, তাহলে এটি খুব ভয়াবহ ব্যাপার হবে। সরকারকে এ ঘটনায় গাফিলতির জবাব দিতে হবে। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

হামলা ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত প্রথম আলো কার্যালয় পরিদর্শন শেষে তিন–দলীয় জোট—গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের নেতারা এ কথা বলেন।

জোটের মুখপাত্র ও এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এবং এবি পার্টির শীর্ষ নেতারা আজ শুক্রবার রাতে কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয় পরিদর্শন করেন। পরে তাঁরা উপস্থিত বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীর সঙ্গে কথা বলেন।

এ সময় জোটের মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার প্রথম আলোর কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার মধ্য দিয়ে জনগণের ঐক্য বিনষ্ট করা হয়েছে। গণমাধ্যম থেকে শুরু করে যেকোনো প্রতিষ্ঠান রক্ষা করতে হবে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের রাজনীতি, আদর্শ ও নীতি আলাদা থাকতে পারে। ভিন্নমত থাকলে সমালোচনা করা যায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলা, প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ খুবই অশনিসংকেত। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক উত্তরণে দেশ নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। সেই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে এ ধরনের কারসাজি হতে পারে।

প্রথম আলো, ডেইলি স্টার–এ হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা দেখা গেছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, এর আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এই কাজ বাইরের কে করছে, সরকার সেটি চিহ্নিত করতে পারে। সেটি সরকারের দায়িত্ব। আর যদি সরকারের ভেতরে কারও যোগসাজশ থাকে, তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটা সহজ হয়। তিনি বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ ঘটনার পর সরকার বিবৃতি দিয়ে দায়সারা কাজ করেছে। এ ধরনের চক্রান্তগুলোর বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে সরকারের কাছে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কিছু মানুষ এখানে এসে যে নাশকতা করেছে, প্রশাসন চাইলেই তা থামাতে পারত। কিন্তু তারা সেটি করেনি।

কিছু মানুষ এখানে এসে যে নাশকতা করেছে, প্রশাসন চাইলেই তা থামাতে পারত।
নাহিদ ইসলাম, আহ্বায়ক, এনসিপি

হাসনাত কাইয়ূম বলেন, সরকার যদি অগ্নিসন্ত্রাসীদের প্রতি পক্ষপাত করে, তাহলে এটি খুব ভয়াবহ ব্যাপার হবে। নির্বাচনের মুখে দাঁড়িয়ে যে সংবাদ জাতিকে দেওয়া হলো, সেটা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়। এসব ঘটনার জন্য সরকারের যে গাফিলতি ও নিষ্ক্রিয়তা আছে, এর জবাব তাদের দিতে হবে। সরকারকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলতে হবে। সরকার কেন বারবার ফেল করছে, তা জনগণের সামনে পরিষ্কার করতে হবে।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, শাহবাগে বিক্ষুব্ধ জনতার বিক্ষোভের বাইরে বিচ্ছিন্ন কিছু গোষ্ঠী বা বিচ্ছিন্ন কিছু ব্যক্তির নেতৃত্বে মানুষ এসে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। বিশেষ করে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও ছায়ানটের মতো প্রতিষ্ঠানে হামলা করা হয়েছে। এটা নিকৃষ্ট ও ঘৃণ্যতম কাজ।

সরকারের সমালোচনা করে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, সরকার সবাইকে শান্ত থাকার জন্য বলেছিল। তার মানে, সরকার জানে অশান্ত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। কিন্তু এসব নাজুক জায়গাগুলোতে কেন পর্যাপ্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্য ছিল না, সেটা রহস্যজনক।

এ সময় এনসিপির নেতাদের মধ্যে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সারজিস আলম, সামান্তা শারমিন, তাসনিম জারা; রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের দিদারুল আলম ভূঁইয়া, এবি পার্টির সানি আবদুল হক ও জাতীয় ছাত্রশক্তির সভাপতি জাহিদ আহসানসহ গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।