আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যসহ ২৬ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

মামলার ৩০ আসামির মধ্যে পলাতক ২৬ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল-২ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদ।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ আজ সোমবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারপতি নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

আজ সকালে ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়। আনুষ্ঠানিক অভিযোগে ৩০ জনকে আসামি করা হয়।

৩০ আসামির মধ্যে চারজন গ্রেপ্তার আছেন। তাঁরা হলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ। তাঁদের পরবর্তী শুনানির তারিখে ট্রাইব্যুনাল-২-এ হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১০ জুলাই।

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ গত ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন

আজকের শুনানিতে আসামিদের ভূমিকা তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানিতে তিনি বলেন, আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদ, রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক উপকমিশনার (অপরাধ) মো. আবু মারুফ হোসেন ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম যৌথ দায় ও ঊর্ধ্বতন অবস্থানে ছিলেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, উল্লিখিত চার আসামি ঊর্ধ্বতন অবস্থানে থেকে যৌথভাবে নির্দেশনা দিয়ে তাঁদের অধীন ও নিয়ন্ত্রণাধীন আসামি এএসআই (সশস্ত্র) মো. আমীর হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য সদস্যদের মাধ্যমে ঘটনাস্থলে আগ্নেয়াস্ত্রের মাধ্যমে গুলি চালিয়ে নিরস্ত্র আবু সাঈদকে হত্যা করেন। সেই সঙ্গে কমপক্ষে চারজনকে আহত করা হয়। এ ছাড়া অন্য আসামিরা তাঁদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে এ হত্যাকাণ্ড, আক্রমণ ও নির্যাতনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। সহায়তা করেন। হত্যাকাণ্ডকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পরিবর্তনে বাধ্য করেন বা সুবিধা করে দেন।

আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ২৪ জুন চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে জমা দিয়েছিল ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এতে ৩০ জনকে আসামি করা হয়।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন পার্ক মোড় এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।