
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সহযোগী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বিচারের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জুলাই অভ্যুত্থানে মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা এবং গণভবনে গিয়ে তাঁর মদদদাতা শিক্ষকদের বিচারের দাবিতে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তাঁরা এ দাবি জানান।
এ সময় তাঁরা গণহত্যায় মদদদাতা এবং দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ইমেরিটাস অধ্যাপকদের দ্রুত অপসারণ ও ফ্যাসিস্টদের চিরতরে দমন করতে দেশের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান বলেন, ‘আমাদের আজকের কর্মসূচির দুটি এজেন্ডা—খুনি হাসিনার যে রেকর্ড ফাঁস হয়েছে, তার বিচার দাবি এবং তাঁর সঙ্গে যাঁরা উৎসাহ প্রদান করেছেন, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক তৎকালীন সরকারকে ব্ল্যাঙ্ক চেক দিয়েছিলেন যে আপনারা গুলি চালান। সেই আওয়ামীপন্থী শিক্ষকেরা অন্তর্বর্তী সরকারের বিপক্ষেও বিবৃতি দিয়েছেন। এখন আমার প্রশ্ন হলো, যেদিন আমাদের সন্তানদের গায়ে হাত তোলা, অত্যাচার করা এবং হত্যার হুকুম দেওয়া হয়েছিল, সেদিন আপনাদের বিবেক কোথায় ছিল? সেদিন তো আপনারা বিবৃতি দেননি! আমি পরিষ্কারভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব শিক্ষকের বিচার দাবি করছি।’
মানববন্ধনে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, ‘এই অভ্যুত্থান চলাকালে নিজেদের বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচয় দেওয়া একদল শিক্ষক হাসিনাকে গণহত্যায় উদ্বুদ্ধ করেছেন। ৩ আগস্ট গণভবনে গিয়ে তাঁরা শিক্ষার্থীদের ওপর শুধু গুলি চালানোর সমর্থন নয়, বরং উৎসাহ দিয়েছেন। আমরা সবাই জানি তাঁরা কারা। অথচ এখনো পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাঁদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।’
ঢাবি সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আবুল কালাম সরকার বলেন, ‘যত দ্রুত সময়ের মধ্যে শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত করা হবে—এটাই হবে এ দেশে সবচেয়ে বড় সংস্কার। স্বল্প সময়ের মধ্যে শেখ হাসিনার বিচার সম্পন্ন করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
ঢাবি সাদা দলের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আল-আমিন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের হাতে তিনটি তালিকা আছে। একটি তালিকায় ৭৮ জন শিক্ষককে শিক্ষার্থীরা বয়কট করেছে। ৭১ জন শিক্ষকের বিবৃতিতে যাঁরা আছেন, বেশির ভাগ বয়কটকৃত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহ্বান, তাঁদের কঠোর হাতে দমন করুন।’
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাবি আইবিএর অধ্যাপক মহিউদ্দিন, মার্কেটিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ বি এম শহীদুল ইসলাম, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক শেখ আজহারুল ইসলাম, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এনামুল হক, চারুকলা সাদা দলের আহ্বায়ক শিল্পী ইসরাফিল রতন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন, পি জে হার্টস ইন্টারন্যাশনাল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম এ কাওসার, অধ্যাপক শফিউল্লাহ, অধ্যাপক ড. আসাদ চৌধুরী, হাফিজ উদ্দিন ভুঁইয়া, অধ্যাপক আবদুস সালাম, অধ্যাপক শাহ শামিম, অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলামসহ অনেকে।