আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করি, যেখানে শুদ্ধ অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে
খুব বেশি কিছু নেই। পৃথিবীর সব দেশই এখন কমবেশি একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে।
সম্প্রতি ঢাকায় নানা মহলে অভিযোগ তোলা হয়েছে, বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র বড় বেশি নাক গলাচ্ছে। নির্বাচনের স্বচ্ছতা, রাজনৈতিক কর্মসূচির ক্ষেত্রে বিরোধী পক্ষের জন্য সমান সুযোগ, র্যাব ইত্যাদি হাজারো দাবি তুলে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের যখন-তখন উপদেশ দিচ্ছে। এমনকি আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য বেছে বেছে ব্যক্তিবিশেষের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে। এসবই, কারও কারও চোখে, আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্যায় হস্তক্ষেপ।
সমস্যা হচ্ছে, আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করি, যেখানে শুদ্ধ অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে খুব বেশি কিছু নেই। পৃথিবীর সব দেশই এখন কমবেশি একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। এক রাষ্ট্রের ভেতর ঘটে, এমন অনেক কিছু অন্য রাষ্ট্রের ওপরও ঢেউ ফেলে। ধরুন, কোভিড–১৯ অতিমারির কথা। চীন থেকে যে এই ভাইরাসের উৎপত্তি, সে ব্যাপারে আমরা মোটামুটি একমত। ফলে, এই ভাইরাস কেন ছড়াল এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন কিছু না ঘটে, তা ঠেকাতে চীন কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, সে প্রশ্ন তো আমরা করতেই পারি। তাতে চীন তার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে যত প্রতিবাদই করুক না কেন।
আমাদের প্রতিবেশী ভারতে নাগরিকত্ব প্রশ্নে নতুন যে আইন হয়েছে, তার ফলে লাখ লাখ মুসলমান সে দেশে অবৈধ হয়ে পড়তে পারে। ভারতের ভেতর তো বটেই, বাইরেও এই আইনের প্রতিবাদ হয়েছে। ভারতের যুক্তি, এটি তাদের নিজস্ব ব্যাপার, সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষায় তাদের এই আইন করতে হয়েছে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ বলেছে, এটা মোটেই শুধু ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নয়। এই আইনের ফলে লাখ লাখ মানুষ তাঁদের নাগরিকত্ব হারাবেন, আশ্রয়ের জন্য তাঁরা পা বাড়াবেন প্রতিবেশী দেশে। তাহলে এটা কী করে শুধু ভারতের একার ব্যাপার হয়?
একই কথা মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের নিয়ে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা বলে মিয়ানমার যতই সাফাই গাক না কেন, কেউ সে কথায় কান দেয়নি। পৃথিবীর প্রায় সব দেশই অবিলম্বে দেশচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মিয়ানমারের কাছে দাবি জানিয়েছে। বাংলাদেশও এই প্রশ্নে মধ্যস্থতার জন্য জাতিসংঘের ‘অভিভাবকত্ব’ মেনে নিয়েছে। শুধু মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার হলে তৃতীয় পক্ষ এভাবে নাক গলাতে পারত না।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে যে নতুন বিশ্বব্যবস্থা গড়ে উঠেছে, তার কাঠামোগত অপূর্ণতা সত্ত্বেও, এ কথা এখন মোটের ওপর স্বীকৃত যে জাতিসংঘভুক্ত প্রতিটি দেশকে কিছু কিছু মৌলিক নীতিমালা মেনে চলতে হয়। মানবাধিকার, আইনের শাসন, গণতন্ত্র ইত্যাদি এই নীতিমালার অন্তর্গত। প্রায় সব মৌলিক প্রশ্নেই এখন আন্তর্জাতিক চুক্তিপত্র বা কনভেনশন গৃহীত হয়েছে। কারও চাপে পড়ে নয়, স্বেচ্ছায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সেসব চুক্তির স্বাক্ষরকারী। ধরা যাক, শিশুশ্রম অথবা বাল্যবিবাহ। আপনার দেশে যে প্রথাই প্রচলিত থাকুক, এ–সংক্রান্ত চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করলে তাতে নির্ধারিত বিধান মেনে চলতে আপনি বাধ্য। অর্থাৎ, ১৮ বছরের কমবয়সী বালককে শ্রমে নিয়োগ করলে অথবা ১৫ বছরের কম কোনো বালিকাকে বিয়ে করতে বাধ্য করলে আপনি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করবেন। নিজ দেশের সংস্কৃতি বা নিয়ম-রীতির কথা বলে যতই লম্বা ফিরিস্তি দিন না কেন, আন্তর্জাতিক ফোরামে এই ব্যাপারে আপনাকে জেরা করা হতেই পারে।
এ তো গেল আইনের কথা। প্রযুক্তির কথা ভাবুন। যে তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আমাদের বাস, সেখানে নিজস্ব বা অভ্যন্তরীণ বলে এখন আর কিছু নেই। আপনার দেশে নিরাপত্তাবাহিনী গুম-খুন করে চলেছে, এমন অভিযোগ নিয়ে যদি বিদেশি বার্তা সংস্থা সিনেমা বানায়, আপনি তাকে ঠেকাবেন কী করে? বড়জোর নিজের দেশে সে সিনেমার উন্মুক্ত প্রচার আপনি ঠেকাতে পারেন, কিন্তু মুখ বুজে সে নির্দেশ মেনে চলবেন, এমন সুশীল নাগরিক কোথায় পাবেন?
গুজরাটের মুসলিম নিধনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা ঘিরে একটি তথ্যচিত্র বানিয়েছে বিবিসি। ভারত সরকার লম্বা ঘোষণা দিয়ে সে তথ্যচিত্রের প্রদর্শনী নিষিদ্ধ করেছে। ফল হয়েছে উল্টো, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীরা দল বেঁধে সে তথ্যচিত্র দেখছেন। শুধু ছাত্রছাত্রী কেন, বিরোধী কংগ্রেস দল কাগজে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সদলবল সেই তথ্যচিত্রের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছে।
অথবা ভাবুন চীনের শিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের ওপর অব্যাহত নির্যাতনের প্রশ্নটি। চীন যতই ‘এটা আমার অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে প্রচার করুক, আধুনিক তথ্যব্যবস্থার সুবাদে পৃথিবীর মানুষ জেনে গেছে ‘পুনঃশিক্ষা প্রদান’ কর্মসূচির নামে সেখানে উইঘুরদের ওপর কেমন নির্যাতন চলছে। কয়েক বছর আগে নিউইয়র্ক টাইমস খোদ চীনা সরকারের প্রায় ৪০০ পাতার অতি গোপনীয় মূল নথি পত্রিকার পাতায় ছেপে দেয়। এইখানে দেখুন
আসলে বিদেশি বা আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ ঠেকানোর প্রয়োজন পড়ে, যখন আমরা কোনো কিছু ঢাকতে চাই। গুম–খুন হলে আমরা চেঁচিয়ে বলি, না, গুমখুন হয়নি। সত্যি যদি গুম–খুন না হয়, তাহলে তো চেঁচানোর প্রয়োজন পড়ে না। মোদি সাহেব যদি গুজরাটের হত্যাকাণ্ডের হোতা না হতেন, তাঁকে হুমকি দিয়ে বিবিসির তথ্যচিত্র বন্ধের এই হাস্যকর ও বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হতো না। সত্যি সত্যি যদি দশ লাখ রোহিঙ্গা সামরিক হামলার মুখে দেশত্যাগে বাধ্য না হতো, তাহলে এই প্রশ্নে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দেশের নেতাদের জেরার মুখে পড়তে হতো না।
আইনভিত্তিক যে বিশ্বব্যবস্থার কথা আগে উল্লেখ করেছি, তা এই সাধারণ সম্মতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত যেসব ছোট-বড় দেশ, তাদেরই গৃহীত এসব নীতিমালা মেনে চলবে। এই আন্তর্জাতিক অবস্থা কেমন হবে, জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার অনেক আগে, প্রায় ২০০ বছর আগে প্রথম তার রূপরেখা প্রণয়ন করেন জার্মান দার্শনিক এমানুয়েল কান্ট। তিনি যে ‘গণতান্ত্রিক দেশসমূহের শান্তিপূর্ণ সংস্থা’ প্রস্তাব করেন, তার মোদ্দা কথাই ছিল, এই সংস্থাভুক্ত প্রতিটি দেশ শান্তি, অনাক্রমণ ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার মতো নীতিমালা কঠোরভাবে মেনে চলবে। কেউ সে নিয়ম ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে যৌথভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। জাতিসংঘভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থারও একই কথা। দায়িত্বটা একক নয়, সম্মিলিত। জাতিসংঘ সনদের ৫৫ ও ৫৬ ধারায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, ‘মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা’ রক্ষায় সংস্থাভুক্ত দেশগুলো ‘সম্মিলিতভাবে’ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
আইনভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থা বলছি বটে, কিন্তু এটা কোনো গোপন ব্যাপার নয় যে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার অজুহাতে ক্ষমতাশালী দেশগুলো যত্রতত্র কাছে-দূরের দেশে সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করছে। একই যুক্তিতে তারা ‘সরকার বদল’ বা ‘রেজিম চেঞ্জের’ রাজনীতিও অনুসরণ করছে। দেখা গেছে, যারা আইনভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থার কথা বলে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারাই নিজ স্বার্থ উদ্ধারে সবচেয়ে বেশি এই আইন ভাঙে। উদাহরণ হিসেবে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ হামলার কথা ধরুন। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবেশী এই দুর্বল দেশের ওপর সে হামলা করে বসেছে, লক্ষ্য পুরো দেশটিকে নিজ ‘সাম্রাজ্যে’র ভেতর ঠেসে ফেলা। নিরাপত্তা পরিষদের আরেক স্থায়ী সদস্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত ৭০ বছরে ডজনখানেকবার দক্ষিণ আমেরিকা থেকে, আফ্রিকা থেকে মধ্যপ্রাচ্য পর্যন্ত বারবার ঠিক এই কাজই করেছে। মানবাধিকার প্রশ্নে ওয়াশিংটন যেভাবে মুখে ফেনা তুলে ফেলে, তাতে দেশটির হিপোক্রেসি বা কপটতা দিনের মতো ফর্সা।
বস্তুত, যে মুহূর্তে কোনো রাষ্ট্র এক বা একাধিক আন্তর্জাতিক চুক্তির অন্তর্ভুক্ত হয়, তখন কিছুটা হলেও নিজের জাতীয় সার্বভৌমত্ব সে স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেয়। যেমন শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষরের ফলে আমরা মেনে নিই যে জাতিসংঘের মতো বহির্গত শক্তি এ ব্যাপারে আমাদের অনুসৃত ব্যবস্থার ওপর নজরদারি করতে পারবে। প্রয়োজনবোধে তারা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বা নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করতে পারবে। যেমন আফগানিস্তানে মেয়েদের শিক্ষা ও কর্মের অধিকার বঞ্চিত করায় তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা আরোপের দাবি উঠেছে। এই যে গুণগত নতুন বিশ্বব্যবস্থা, প্রাচীন ‘ওয়েস্টফালিয়ান’ ব্যবস্থা থেকে তা ভিন্ন। ১৬৪৮ সালে জার্মানির ওয়েস্টফালে ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তির কেন্দ্রে ছিল এই নীতি যে প্রতিটি স্বাধীন দেশের স্বার্বভৌমত্ব অলঙ্ঘনীয়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর এই সার্বভৌমত্বভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থা থেকে আমরা সরে এসেছি। তার জায়গায় এসেছে ‘যৌথ দায়িত্ববোধ’। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে জার্মানি ও জাপানের বিরুদ্ধে অক্ষশক্তির ভূমিকা সেই যৌথ দায়িত্ববোধের প্রকাশ, এ কথা বলা যায়।
সাম্প্রতিক সময়ে এই যৌথ দায়িত্ব আরও কিছুটা সম্প্রসারিত হয়েছে। ‘রেসপনসিবিলিটি টু প্রটেক্ট’ (মানবাধিকার রক্ষার দায়িত্ব) নামে পরিচিত এক নতুন নীতিমালার অধীনে প্রতিটি স্বার্বভৌম দেশ যার যার দেশের নাগরিকদের মত প্রকাশের অধিকারসহ সব মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদানে অঙ্গীকারাবদ্ধ। সে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে পারে। গত শতাব্দীর নব্বই দশকে রুয়ান্ডা ও যুগোস্লাভিয়ায় ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের মুখে সংশ্লিষ্ট সরকারগুলো তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায় ‘আরটিপি’ নামে পরিচিত এই নতুন নীতিমালার প্রবর্তন হয়। ২০০৫ সালে জাতিসংঘের অধীন অনুষ্ঠিত এক বিশ্ব সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে সে সনদ স্বীকৃতি লাভ করে। তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার খেসারত হিসেবে এসব দেশের কোনো কোনো নেতাকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের সম্মুখীন হতে হয়।
সমস্যা হলো, জাতিসংঘের চুক্তি বা সনদে যত ভালো ভালো কথাই থাকুক না কেন, তা যদি সবাই মেনে না চলে, তাহলে তা কাগুজে কথা ছাড়া আর কিছুই নয়। তার কানাকড়ি মূল্যও নেই। বাস্তবে ছোট-বড় সব দেশই তাদের আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার হরহামেশা লঙ্ঘন করে থাকে। এই অবস্থা পরিবর্তনের একটাই উপায়। আর তা হলো, ইতিমধ্যে গৃহীত আইনভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থাকে আরও জোরদার করা। কিন্তু বড় বড় দেশই যেখানে যত্রতত্র এই সম্মিলিত নীতিমালা লঙ্ঘন করছে, সেখানে বেড়ালের গলায় শিগগিরই ঘণ্টি পরার কোনো সম্ভাবনা আছে বলে মনে হয় না।
আপাতত আমাদের এইটুকুতেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে যে বড় দেশগুলোর চোখ রাঙানির একটা ভালো দিক হলো, এর ফলে আমরা কখনোসখনো কিছুটা নড়েচড়ে বসি। বাংলাদেশের কথাই ধরুন। সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে লুর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, র্যাব আগে কিছু ‘উল্টাপাল্টা’ যে করেছে, তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে র্যাবের জবাবদিহি নিশ্চিতের ক্ষেত্রে এখন অনেক উন্নতি হয়েছে।
২৮ জানুয়ারি ২০২৩, নিউইয়র্ক