
রাজধানীর ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ৫ নম্বর সড়কের ৫৪ নম্বর বাড়ি। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া ওই বাড়ি ‘সুধা সদন’ নামে পরিচিত। গত ৬ ফেব্রুয়ারি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর সুধা সদনেও আগুন দেওয়া হয়েছিল।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ওই বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, সুনসান। ধানমন্ডি লেকের পাড়ঘেঁষা ওই বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে কেউ কেউ লেকপাড়ে হাঁটতে যাচ্ছেন। বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে দেখা গেল, ফটকের পাশে নিরাপত্তাকর্মীর একটি কক্ষ রয়েছে। ওই কক্ষের দেয়ালে এ-ফোর আকৃতির কাগজে চারটি নোটিশ টানানো। এর মধ্যে ওপরের দিকে টানানো নোটিশ দুটি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। নিচের দিকে থাকা নোটিশ দুটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর অফিস থেকে দেওয়া হয়েছে।
দুদকের টানানো নোটিশগুলো শেখ রেহানার মেয়ে রিজওয়ানা সিদ্দিককে (টিউলিপ সিদ্দিক) দেওয়া হয়েছে। আর এনবিআরের নোটিশ দুটি দেওয়া হয়েছে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে।
দুদকের দেওয়া একটি নোটিশের স্মারক নম্বর ২৫-৩০৭৭৭। নোটিশটি দেওয়া হয়েছে গত ১৫ জুন। টিউলিপ সিদ্দিককে দুদক এই নোটিশ দিয়েছে মামলা তদন্তের স্বার্থে তাঁর বক্তব্য শুনতে এবং নিতে। এতে বলা হয়েছে, মামলাটি দুদকের ঢাকা-১–এর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের ১৭ নম্বর মামলা। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন।
অভিযোগের বিবরণে উল্লেখ রয়েছে, আসামী (১) রিজওয়ানা সিদ্দিকী (টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক) পিতা শফিক সিদ্দিকী (শফিক আহমেদ সিদ্দিক) মা রেহানা সিদ্দিক ওরফে শেখ রেহানা। এই আসামীসহ অন্যদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে ষড়যন্ত্র, অসদাচরণ ও বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোনো টাকা পরিশোধ না করেই অবৈধ পারিতোষিক হিসাবে ইস্টার্ণ হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে রেজিস্ট্রির মাধ্যমে গুলশানের ৭১ নম্বর সড়কে ১১এ ও ১১বি বাড়ির ফ্ল্যাট নম্বর বি/২০১ দখলে নেওয়ার সহযোগিতা করার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে টিউলিপকে ২২ জুন দুদকের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত হতে বলা হয়েছিল। এদিকে অন্য আরেকটি নোটিশের স্মারক নম্বর আলাদা হলেও মামলার নম্বর ও বিষয়, নোটিশ জারির তারিখ, আসামি ও তদন্তকারী কর্মকর্তা—সবই এক।
এদিকে সজীব ওয়াজেদ জয়কে দেওয়া এনবিআরের আয়কর অফিসের নোটিশ দুটিও একই দিনে, গত ২০ জুলাই কর অঞ্চল-৬ এর ১২২ নম্বর সার্কেল থেকে দেওয়া হয়েছে। একটি নোটিশে বলা হয়েছে জয় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আয়কর রির্টান দাখিল করেননি। নোটিশ পাওয়ার ২২ দিনের মধ্যে জয়কে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে বলা হয়েছিল। আর আরেকটি নোটিশে বলা হয়েছে, জয় আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে ব্যর্থ হয়েছেন। কেন ব্যর্থ হয়েছেন, ১০ আগস্টের মধ্যে এর কারণ দর্শাতে জয়কে অথবা প্রতিনিধিকে উপকর কমিশনারের কার্যালয়ে উপস্থিত হতে বলা হয়েছিল।