বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক

গোপালগঞ্জে প্রশাসন চাইলে রক্তপাত এড়ানো যেত

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা, সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। আজ রোববার এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক বলেছে, প্রশাসন চাইলে এই অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষ ও রক্তপাত অবশ্যই এড়ানো যেত।

একই সঙ্গে এই সহিংসতা দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করেছে কি না, তদন্তে সেটি স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই প্ল্যাটফর্ম।

শিক্ষক নেটওয়ার্ক বলেছে, যেকোনো বৈধ রাজনৈতিক দলের দেশের যেকোনো জেলায় রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। সরকারের দায়িত্ব কর্মসূচির নিরাপত্তা দেওয়া ও জননিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয়, তা নিশ্চিত করা। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এবং প্রশাসন এনসিপির সমাবেশে নিরাপত্তা তো দেয়ইনি, বরং তাদের ভুল তথ্য দিয়ে আক্রমণের মুখে ফেলেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সারা দেশের তুলনায় গোপালগঞ্জকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি ধরা হয়। জুলাই অভ্যুত্থানের পরেও ব্যাপারটা সত্য। শেখ হাসিনার পতনের পর এই গোপালগঞ্জেই সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালানো হয়েছিল। এমন দৃষ্টান্ত থাকার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা মাঠে থাকা যৌথ বাহিনী সেখানে কার্যকর কোনো প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি; বরং পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী আগে প্রতিরোধের বদলে সহিংসতা শুরু হলে গুলিবর্ষণ করেছে।

এনসিপির কোনো কোনো নেতার ফেসবুক পোস্ট পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছিল অভিযোগ করে শিক্ষক নেটওয়ার্ক বলেছে, এনসিপির চলমান ‘জুলাই পদযাত্রা’ কেন ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ হয়ে গেল, সেটিও প্রশ্নের উদ্রেক ঘটিয়েছে।

আটক করা ব্যক্তিকে বুট দিয়ে আঘাত, নিহত ব্যক্তিদের ময়নাতদন্ত না করা উদ্বেগজনক এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলছে শিক্ষক নেটওয়ার্ক। বিবৃতিতে তারা বলেছে, এসব ঘটনা রাষ্ট্রীয় সহিংসতার চিহ্ন বহন করে। এ ধরনের নৃশংস বলপ্রয়োগ, নির্বিচার গুলি চালানো ও প্রাণহানির ঘটনা দেশের মানবাধিকারের মূল্যবোধ, গণতান্ত্রিক পরিবেশ এবং নাগরিক নিরাপত্তার প্রতি সরাসরি হুমকি।

ঢালাওভাবে মামলা দায়ের, নির্বিচার গ্রেপ্তার কিংবা রাজনৈতিক হয়রানি না করার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষক নেটওয়ার্ক বলেছে, সহিংসতা দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে কি না, তদন্তে সেটিও স্পষ্ট হওয়া উচিত।

বিবৃতিতে শিক্ষক নেটওয়ার্ক বেশ কয়েকটি দাবি জানিয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে আহতদের চিকিৎসা, নিহত ও আহতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ, আইনি সহায়তা এবং সত্য উদ্‌ঘাটনের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করা; এনসিপির ওপর হামলার পেছনে দায়ীদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি সমাবেশে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি থাকলে তার জবাবদিহির ব্যবস্থা করা; প্রাণঘাতী অস্ত্র দিয়ে নাগরিক হত্যার দায় যাদের, তাদের চিহ্নিত করা এবং প্রয়োজনীয় শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ।