
নতুন বিদেশি কর্মী নেওয়ার আবেদন বন্ধ করে দিয়েছে মালয়েশিয়ার সরকার। গতকাল শনিবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এটি বলবৎ থাকবে। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী ভি শিবকুমার এক বিবৃতিতে এটা জানিয়েছেন, যা নিশ্চিত করেছে দেশটির সরকারি গণমাধ্যম বারনামা। যেসব আবেদন ইতিমধ্যে জমা হয়েছে, তাঁরা যেতে পারবেন দেশটিতে।
তবে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে আজ রোববার সকালে বলেছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে মালয়েশিয়া সরকারের কাছ থেকে কোনো চিঠি আসেনি। এটি আসতে সাধারণত কয়েক দিন সময় লাগে। তাই এ বিষয়ে এখনই আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করা যাচ্ছে না।
বিবৃতিতে ভি শিবকুমার বলেছেন, ১৪ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে মোট ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৩৯৬ জন বিদেশি কর্মী নিয়োগের আবেদন অনুমোদন করা হয়েছে। মূলত পাঁচটি খাতের জন্য বিদেশি কর্মীর এ চাহিদা অনুমোদন করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে উৎপাদন, নির্মাণ অবকাঠামো, বৃক্ষরোপণ, কৃষি ও সেবা (রেস্তোরাঁ) খাত।
ভি শিবকুমার বলেন, যে পরিমাণ কর্মীর আবেদন অনুমোদন করা হয়েছে, তা দিয়ে শিল্পসহ গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ খাতের কর্মী চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। যাদের কর্মী নিয়োগের চাহিদা ইতিমধ্যে অনুমোদন হয়েছে, তাদের দ্রুততার সঙ্গে নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করার অনুরোধ করেছেন তিনি। যে পরিমাণ কর্মী নিয়োগ অনুমোদন করা হয়েছে, সে তুলনায় আসার হার খুবই কম।
এর আগে বাংলাদেশের ১০ রিক্রুটিং এজেন্সি চক্র গড়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম করার অভিযোগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। এরপর দুই দেশের মধ্যে অনেক আলোচনার পর গত আগস্ট থেকে আবার খুলে যায় দেশটির শ্রমবাজার।
এবারও ২৫ এজেন্সির একটি চক্রের মাধ্যমে কর্মী পাঠানো শুরু হয়। পরে এটি বাড়িয়ে আরও ৫০টি এজেন্সিকে কর্মী পাঠানোর অনুমতি দেয় মালয়েশিয়ার সরকার। এরপর দেশটিতে যেতে এ পর্যন্ত নিবন্ধন (স্মার্ট কার্ড) নিয়েছে এখন লাখ ৪ হাজার ৪০৪ জন কর্মী। ১৯৯২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বৈধভাবে মালয়েশিয়া গেছেন সাড়ে ১০ লাখ বাংলাদেশি কর্মী।
বর্তমানে ১৫ লাখ বিদেশি কর্মী কাজ করেন মালয়েশিয়ায়। এর মধ্যে শীর্ষে বাংলাদেশের কর্মীরা। ৪ লাখ ৪৫ হাজার বাংলাদেশি কর্মী কাজ করেন নির্মাণ, কৃষি, উৎপাদন ও সেবা খাতে। নতুন করে আরও ৫ লাখ কর্মী পাঠানোর সুযোগ ছিল। তবে এবার শ্রমবাজার চালুর পর খুব বেশি কর্মী পাঠানো যায়নি। সব এজেন্সির জন্য কর্মী পাঠানোর সুযোগ উন্মুক্ত করার দাবি থাকলেও তা হয়নি।