নাগরিক সংলাপে বক্তারা। শনিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে
নাগরিক সংলাপে বক্তারা। শনিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কার্যক্রম পরিদর্শনের সুযোগ দিতে হবে: ইফতেখারুজ্জামান

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কার্যক্রম পরিদর্শনের সুযোগ মানবাধিকার কমিশনকে দেওয়া দরকার বলে মনে করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, যেসব সংস্থা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, একটি নজরদারিভিত্তিক সমাজে পরিণত করেছে, যেসব সংস্থার পরিবর্তন না হলে, সংস্কার না হলে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কোনো সংস্কারই কার্যকর হবে না।

আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এক নাগরিক সংলাপে ইফতেখারুজ্জামান এ কথাগুলো বলেন। খসড়া জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫-এর ওপর এ সংলাপের আয়োজন করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ।

নাগরিক সংলাপের সঞ্চালনা করেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি ইফতেখারুজ্জামানকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা সবাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথা বলছেন, সেনাবাহিনীর কথা সুনির্দিষ্টভাবে বলছেন, এর ফলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে না?’

জবাবে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘অ্যাবসলিউটলি নট (অবশ্যই নয়)। জাতীয় নিরাপত্তা এক জিনিস, আর মানুষের মানবাধিকার সম্পূর্ণ অন্য জিনিস। মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা ছাড়া কোনো দেশে জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা মোটেই সম্ভব নয়। এই মানবাধিকার বাদ দিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা কথাটা ভাবাই অবান্তর। কাজেই নিরাপত্তা সংস্থা যতগুলো আছে, রাষ্ট্রীয় সংস্থা সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো—সবাইকে এই মানবাধিকার কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত করতে হবে। তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করবে না। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কার্যক্রম পরিদর্শনের সুযোগ মানবাধিকার কমিশনকে দিতে হবে।’

ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, যেসব আয়নাঘর সারা দেশব্যাপী হয়েছে, সেসব পরিদর্শনের দায়িত্ব বা এখতিয়ার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে দিতে হবে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বাংলাদেশে ধারাবাহিকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ডিজিএফআই, এনএসআই, ডিবি, এনটিএমসির মতো সংস্থাগুলো। জাতিসংঘের মানবাধিকার সুপারিশেও পরিষ্কারভাবে সংস্থাগুলোকে সংস্কার, কোনো কোনো সংস্থার বিলুপ্ত করার কথা বলা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার কেন সে বিষয়ে কোনো অবস্থান ঘোষণা করছে না, কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না, সে প্রশ্নও রাখেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গুম–সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক ও সারা হোসেন, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, চাকমা সার্কেলের প্রধান রানি ইয়ান ইয়ান প্রমুখ।