দুর্ঘটনায় ছাদ উড়ে যাওয়ার পরও যাত্রীদের নিয়ে প্রায় ছয় কিলোমিটার চালিয়ে নেওয়া বাসটির নিবন্ধন সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। একই সঙ্গে বাসটির মালিককে নিবন্ধন, ফিটনেস, রুট পারমিট, ট্যাক্স-টোকেন সনদ এবং চালকের লাইসেন্সসহ বিআরটিএর কার্যালয়ে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় বাসটির নিবন্ধন সনদ স্থায়ীভাবে বাতিল এবং মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিআরটিএর উপপরিচালক সানাউল হকের সই করা এক চিঠিতে এই কথা বলা হয়।
বিআরটিএর মুন্সিগঞ্জ সার্কেলের সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে চিঠিতে বলা হয়, উল্লেখিত বাসটি ‘বরিশাল এক্সপ্রেস’ নামে চলাচল করে। এর নিবন্ধন নম্বর ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৯৩৫০। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের কামারখোলা এলাকায় একটি কারকে ধাক্কা দেয় বাসটি। এরপর সামনে থাকা আরেকটি কাভার্ডভ্যানকে ধাক্কা দেয়। বাসটির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে চালক আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পেছনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়ি দেখে বাসচালক আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এরপর সমষপুর এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ের রেলিংয়ে লেগে বাসটির ছাদ উড়ে যায়। এতে বাসটির আটজন যাত্রী আহত হন।
প্রথম আলোর মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধির পাঠানো তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে প্রায় ৬০ জন যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশে বাসটি ছাড়ে। ঘণ্টাখানেক পর বাসটি ঢাকা–মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠে। বাসটি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের কামারখোলা সেতুতে উঠলে একটি কাভার্ড ভ্যানের পেছনে জোরে ধাক্কা দেয়। এতে তখনই বাসের ছাদ সামনে থেকে ভেঙে পেছনে গিয়ে আটকে থাকে। চালক বাসটি না থামিয়ে আরও দ্রুতগতিতে চালাতে থাকেন। পরে বাসটি ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে সমষপুরে গেলে ছাদটি উড়ে পড়ে যায়। এ সময় একটি প্রাইভেট কারকেও ধাক্কা দেয় বাসটি। যাত্রীসহ ছাদবিহীন বাস চালিয়ে যেতে থাকেন চালক। সমষপুর অতিক্রম করে আরও একটি প্রাইভেট কারকে ধাক্কা দেয় বাসটি।
বাসে থাকা যাত্রীরা তখন ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। চালক ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকার ভেতরের একটি সড়কে নিয়ে যান ছাদবিহীন বাসটিকে। রাত ১০টার দিকে যাত্রীদের চিৎকার শুনে বাসটি ঘেরাও করেন জনতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান হাইওয়ে পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগর উপজেলার কামারখোলা সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বাসটির অজ্ঞাতনামা চালক, চালকের সহকারী, মালিকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।