স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সোমবার এক সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সোমবার এক সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

সভা চলাকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রধান উপদেষ্টার ফোন, না পেয়ে ডাকসু ভোট নিয়ে বার্তা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের (ডাকসু) সার্বিক প্রস্তুতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আজ সোমবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি সভা চলছিল। সভায় সভাপতিত্ব করছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

সভা চলাকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ফোন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ফোনে না পেয়ে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে মুঠোফোনে একটি বার্তা দেন। পরে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা বৈঠকে উপস্থিত সবাইকে পড়ে শোনান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। বার্তায় অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে বলেন।

বার্তায় আরও বলা হয়, পুরো জাতি ডাকসু নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। এই গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় সবাইকে সর্বাত্মক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে উপস্থিত সরকারের দুজন নীতিনির্ধারক প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বৈঠকে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার দুজন বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান, প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ, পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী, র‌্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমানসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বেলা তিনটায় শুরু হয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠকে ডাকসু নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। সভার শুরুতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ডাকসু নির্বাচনের ওপর নির্ভর করবে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন কেমন হবে। একই সঙ্গে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেমন হবে, তা ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে বোঝা যাবে। তাই যেকোনো মূল্যে ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।

ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর জয়ী প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকেরা মিছিল নিয়ে বের হলে কী ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। একজন বলেন, ক্যাম্পাসে মিছিল নিয়ে বের হলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। আরেকজন বলেন, জয়ীদের মিছিল থামানো কঠিন হবে। তখন সিদ্ধান্ত হয়, ওই সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে হবে।

বৈঠকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কাছে আলোচনার বিষয়বস্তু জানতে চান সাংবাদিকেরা। তবে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে বহুল প্রতীক্ষিত ডাকসু নির্বাচনের খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনে বড় মাপের কোনো আশঙ্কা নেই। তবে কিছু বাধাবিপত্তি রয়েছে। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে স্বচ্ছতাই তার বড় শক্তি। সুষ্ঠু নির্বাচনে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবীর পাশাপাশি পুলিশ, আনসার সদস্যরা থাকবেন। সব মিলিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।