
ভাতা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত ট্রেইনি (প্রশিক্ষণার্থী) চিকিৎসকদের দ্রুত কাজে ফিরে যেতে আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। স্বৈরাচার সরকারের কিছু দুষ্কৃতকারী জড়িত হয়ে এই আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার অপচেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছে কমিটি।
গতকাল রোববার মধ্যরাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিটি পাঠান জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ট্রেইনি চিকিৎসকদের ভাতা বাড়ানোর আন্দোলন যৌক্তিক ছিল। তাঁদের দাবির সঙ্গে নাগরিক কমিটি একমত পোষণ করে। গতকাল তাঁরা মহাসমাবেশ ডাকেন। কথা ছিল, তাঁরা সুশৃঙ্খলভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বটতলায় অবস্থান ধর্মঘট পালন করবেন, কিন্তু তাঁরা কথা রাখেননি।
দুপুর ১২টার পর তাঁরা শাহবাগ অবরোধ করেন। এর ফলে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়েছেন। আশপাশে চার-পাঁচটি হাসপাতাল থাকায় রোগীদের চিকিৎসা চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে।
জাতীয় নাগরিক কমিটি আরও বলেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সাইদুর রহমানের আমন্ত্রণে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ), ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) ও জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধিদলের মধ্যে আলোচনা হয়। এতে আগামী জানুয়ারি থেকে ভাতার পরিমাণ ৩০ হাজার টাকা ও জুলাই থেকে ৩৫ হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়।
একমত পোষণ করার পরও ট্রেইনি চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদল শাহবাগে ফিরে গিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। তাদের এই সিদ্ধান্ত হঠকারিতামূলক বলছে নাগরিক কমিটি।
নাগরিক কমিটির অভিযোগ, ‘আমরা জেনেছি, এই আন্দোলনের পেছনে পতিত স্বৈরাচার সরকারের কিছু দুষ্কৃতকারী জড়িত হয়ে পড়েছে। পতিত স্বৈরাচারের দুষ্কৃতকারীরা এই আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করছে।’
চিকিৎসকদের ন্যায়সংগত যেকোনো আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করবে বলে জানিয়েছে নাগরিক কমিটি। কিন্তু রাষ্ট্রবিরোধী ও স্বৈরাচারদের উসকানিতে কোনো আন্দোলন করা হলে সেখানে কোনো সম্পৃক্ততা থাকবে না বলেছে কমিটি।
শাহবাগ ছেড়ে হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করে মানুষের ভোগান্তি দূর করতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নাগরিক কমিটি।
ভাতা বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে গতকাল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ট্রেইনি (প্রশিক্ষণার্থী) চিকিৎসকেরা। গতকালের বিক্ষোভে অংশ নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ও বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসে (বিসিপিএস) অধিভুক্ত পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকেরা। গতকাল রাত আটটা পর্যন্ত সড়কে ছিলেন তাঁরা।
গত মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রবিধি অনুবিভাগের উপসচিব সৈয়দ আলী বিন হাসানের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এফসিপিএস প্রথম পর্ব পাস করা প্রশিক্ষণার্থীদের মাসিক পারিতোষিক ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা করা হয়। এর আগে গত রোববারও এসব চিকিৎসকেরা তাঁদের বেতন ৫০ হাজার টাকা করার দাবিতে শাহবাগে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন।