Thank you for trying Sticky AMP!!

পাম তেল রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে ইন্দোনেশিয়া

উত্তর সুমাত্রা প্রদেশে রাষ্ট্রীয় সিপিও প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটে অপরিশোধিত পাম তেলে গুণমান পরীক্ষা করছেন

ইন্দোনেশিয়া পাম তেল রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। দেশটির এই পদক্ষেপের কারণে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিশ্বজুড়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পাম তেল বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত উদ্ভিজ্জ তেল। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পাম তেল উৎপাদন করে ইন্দোনেশিয়া। বিশ্ববাজারে সরবরাহের অর্ধেক তারাই জোগান দেয়। এই তেল কেক থেকে শুরু করে প্রসাধনসামগ্রীতে ব্যবহার করা হয়। ফলে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বব্যাপী প্রক্রিয়াজাত খাবারের দাম বেড়ে যেতে পারে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলো খাদ্যে উদ্ভিজ্জ তেল ব্যবহার করা বা জৈব জ্বালানি যেকোনো একটিকে বেছে নিতে বাধ্য হবে।

গতকাল শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো তিনি নিজ দেশে খাদ্যপণ্যের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার কথা বলেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিশ্বজুড়ে রেকর্ড পরিমাণ খাদ্য মূল্যস্ফীতি হওয়ায় তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দেশীয় বাজারে পর্যাপ্ত রান্নার তেল সাশ্রয়ী মূল্যে সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমি এই পদক্ষেপের বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করব।’

বাণিজ্য সংস্থা সলভেন্ট এক্সট্রাক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার সভাপতি অতুল চর্তুবেদী বলেছেন, দেশটির এ সিদ্ধান্ত শীর্ষ ক্রেতা ভারত এবং বিশ্বব্যাপী গ্রাহকদের ক্ষতির মুখে ফেলবে। এই পদক্ষেপ দুর্ভাগ্যজনক ও অপ্রত্যাশিত।

ইন্দোনেশিয়ার এ ঘোষণার পর বিকল্প উদ্ভিজ্জ তেল সয়াবিনের দাম বেড়েছে, ২৮ এপ্রিল থেকে যা কার্যকর হবে। পাম তেলের পর দ্বিতীয় উদ্ভিজ্জ তেল হিসেবে ব্যবহৃত হয় সয়াবিন।

এ বছর বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত পাম তেলের দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ বেড়েছে। কারণ শীর্ষ উৎপাদক দেশ ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় উৎপাদন কমেছে। পাশাপাশি জানুয়ারি মাসে ইন্দোনেশিয়া পাম তেল রপ্তানির ওপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে, যা মার্চ মাসে তুলে নেওয়া হয়।

উত্তর সুমাত্রায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অপরিশোধিত পাম তেল প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটে পাম ফল আনলোড করছেন শ্রমিকেরা

গৃহস্থালি পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বলসহ বেশ কিছু খাদ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানি পাম তেলের বড় ক্রেতা। ওরিও কুকি প্রস্তুতকারক মন্দেলেজ ইন্টারন্যাশনাল ইনক এমডিএলজেড.ওর ওয়েবসাইটে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী পাম তেলের দশমিক ৫ শতাংশ ব্যবহৃত হয় এসব পণ্য উৎপাদনে।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাম তেল রপ্তানিকারী দেশ মালয়েশিয়ার উৎপাদনকারীরা বলছেন, করোনা মহামারির কারণে শ্রমিকসংকট সৃষ্টি হয়েছে। ফলে তাদের উৎপাদন কমে গেছে। আর এই ঘাটতি পোষানোর সম্ভাবনাও কম।

২০১৮ সাল থেকে ইন্দোনেশিয়া নতুন করে পাম তেলের বাগানের জন্য অনুমোদন দেওয়া বন্ধ করেছে। অভিযোগ, এসব বাগান করতে গিয়ে বন উজাড় করা হয়েছে এবং ওরাংওটাংসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস হয়েছে।

সুমাত্রা দ্বীপের জাম্বি প্রদেশে পাম গাছের বাগান

পাম অয়েল ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন গাপকি বলছে, তারা সরকারের নীতি মেনে চলবে। তবে তেলের কিছু মজুত আছে। বিবৃতিতে তারা আরও বলেছে, ‘এই নীতির কারণে পাম অয়েল খাত অস্থিতিশীল হলে আমরা সরকারের কাছে পুনর্বিবেচনার আহ্বান করব।’

সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ায় রান্নার তেলের দাম বেড়েছে। এতে দেশটির অনেক শহরেই গণবিক্ষোভ হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার সরকার রান্নার তেলের দাম লিটারে এক ডলারের কম নির্ধারণ করে দেয়, যদিও বাজারে তা ১ ডলারের বেশি দামে বিক্রি হয়েছে।