Thank you for trying Sticky AMP!!

পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধিতে কৃষকের মুখে হাসি

চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই বাজারে পেঁয়াজের দাম কম ছিল। এতে উৎপাদন খরচ উঠছিল না কৃষকের। কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করায় মলিন ছিল কৃষকের মুখ। এক সপ্তাহ ধরে বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ফলে হাসি ফুটতে শুরু করেছে কৃষকের মুখে।

দেশের বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম পাবনার সুজানগর উপজেলা। এ উপজেলার বেশ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে মূল্যবৃদ্ধির খবরে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। কৃষক ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, উপজেলাটিতে উৎপাদিত ৭০ শতাংশ পেঁয়াজ এখনো কৃষকের ঘরেই আছে। ফলে মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকেরা লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা করছেন।

উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুজানগর উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষ হয়। পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৯৮ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন। পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে ৩ লাখ ১৩ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। এরই মধ্যে মাঠের পেঁয়াজ কৃষকের ঘরে পৌঁছে গেছে। তার মধ্যে ৩০ শতাংশ পেঁয়াজ কৃষকেরা বাজারে বিক্রিও করে ফেলেছেন। বাকি ৭০ শতাংশ বা ২ লাখ ১৯ হাজার ৬০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ এখনো কৃষকের ঘরে মজুত আছে। আগামী মৌসুম শুরুর আগপর্যন্ত ধাপে ধাপে এসব পেঁয়াজ কৃষকেরা বিক্রি করবেন।

স্থানীয় পেঁয়াজচাষি ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, মাস দেড়েক আগে মাঠ থেকে পেঁয়াজ তোলা মৌসুম শুরু হতেই বাজারে পেঁয়াজের দাম কমতে থাকে। এ সময় প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। তিন সপ্তাহ আগে এই দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা মণ। গত সপ্তাহ থেকে এই দাম কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল শুক্রবার জেলার পাইকারি বাজারগুলোতে প্রতি মণ পেঁয়াজ ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

স্থানীয় বেশ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর প্রতি বিঘায় গড়ে ৫০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। রোপণ থেকে শুরু করে বাজারে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতি মণ পেঁয়াজে খরচ পড়ে গড়ে এক হাজার টাকা। ফলে মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষকেরা লোকসানে পেঁয়াজ বিক্রি করছিলেন। এ পর্যন্ত যে পরিমাণ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে, তাতে কৃষকের লাভ দূরে থাক, উৎপাদন খরচই ওঠেনি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় তাই কৃষকেরা কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন। তাঁরা বলছেন, এ দাম থাকলে লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখবেন।

জানতে চাইলে সুজানগর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা রাফিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতে একসঙ্গে বাজারে অনেক পেঁয়াজ বিক্রির জন্য তোলা হয়েছিল। এ কারণে দাম কিছুটা কম ছিল। তবে কম দামে কৃষকেরা খুব বেশি পেঁয়াজ বিক্রি করেননি। তাঁদের ঘরে এখনো ৭০ শতাংশ পেঁয়াজ মজুত আছে।’

খুচরা বাজারে কয়েক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের পাশাপাশি দেশি পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। গত সপ্তাহের শুরুতে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩০–৩৫ টাকা, এখন তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়।