
ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) এখন চলতি জাতীয় ফার্নিচার মেলা, যেখানে এক ছাদের নিচে রয়েছে ৪৮টি ব্র্যান্ডের ২৭৮টি স্টল। সাজিয়ে রাখা হয়েছে সোফা, ড্রয়িং ও ডাইনিং টেবিল, আলমারি, ওয়ার্ডরোব, চেয়ার–টেবিল, দোলনাসহ নানা ধরনের আসবাবপণ্য। এসব পণ্যে ৫ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
‘আমার দেশ, আমার আশা—দেশীয় ফার্নিচারে সাজাবো বাসা’ স্লোগানে আয়োজিত এ মেলা শুরু হয় গত মঙ্গলবার। বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি আয়োজিত এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত। মেলা শেষ হবে আগামী শনিবার।
আজ বুধবার মেলা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ব্র্যান্ডই তাদের প্রচলিত ডিজাইনের পাশাপাশি নতুন ডিজাইনের ফার্নিচারও নিয়ে এসেছে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে তাদের বিশেষ ছাড় ও অফার রয়েছে। অংশগ্রহণকারী ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো—আখতার, হাতিল, ব্রাদার্স, নাদিয়া, জেএমজি, নাভানা, অ্যাথেনাস, পারটেক্স, রিগ্যাল, লেগাসি ইত্যাদি। মেলায় ক্রেতা–দর্শনার্থীদের বেশ ভালো সমাগম দেখা গেছে। তাঁদের অনেকেই পছন্দের ফার্নিচার কিনছেন, কেউ কেউ আবার ফার্নিচার পছন্দ করার পাশাপাশি কোন ব্র্যান্ড কত ছাড় দিচ্ছে, সে খবর নিয়ে বাসায় ফেরেন।
বিক্রেতাদের আশা, আগামী শুক্রবার ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় মেলায় ক্রেতা–দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভিড় হবে। প্রথম দুদিনেও অনেক স্টলে ক্রেতারা ভিড় করেন। হাতিলের বিক্রয় কর্মকর্তা মো. শাহীন জানান, মেলায় তাঁরা ৫ শতাংশ ছাড় দিচ্ছেন। অন্য সময় ছাড় না থাকায় এখন ক্রেতারা পছন্দের পণ্য নিতে আসছেন। তাঁদের স্টলে ১৫টির বেশি নতুন ডিজাইনের পণ্য রয়েছে। এর মধ্যে একটি শোকেস–কাম–ওয়ার্ডরোবের দাম ১ লাখ ৯০০ টাকা। তবে মেলায় ছাড়ে পাওয়া যাচ্ছে ৯৫ হাজার ৮৫৫ টাকায়। চাইলে ১২ কিস্তিতেও কেনা যাবে।
ব্রাদার্স ফার্নিচারও দিচ্ছে ৫ থেকে ১৫ শতাংশ ছাড়। তাদের নতুন ডিজাইনের অস্টিন খাটের দাম সাড়ে ৫২ হাজার টাকা।
গাজীপুর থেকে স্ত্রী–সন্তানসহ আসা ফরিদ আক্তার বলেন, পছন্দ হলে পরে কিনবেন। উত্তরার দম্পতি বলেন, ‘একটা আলমারি পছন্দ হয়েছে, দাম ৪২ হাজার টাকা। ছাড়ে ৩৪ হাজারে নেমেছে। ৩২ হাজারে দিলে আমরা নেব।’
নাদিয়া ফার্নিচারের সিনিয়র সেলস অফিসার মেহেদী হাসান মনে করেন, আসন্ন বাণিজ্য মেলায়ও নতুন ডিজাইন দেখানোর ক্ষেত্রে এই মেলা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জানান, মেলা উপলক্ষে সারা দেশে তাঁদের শোরুমগুলোতেও ১০ শতাংশ ছাড় চলছে।
পারটেক্স ফার্নিচারের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ রোমান মোল্লা জানান, পণ্যভেদে তাঁরা কিছুটা ছাড় দিচ্ছেন। ওমেগা ফার্নিচারের ম্যানেজার (সেলস) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমাদের ১ লাখ টাকার সোফা এখন ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।’
মেলায় নাভানা, হাতিম ও রিচ হোম ফার্নিচার ১৫ শতাংশ পর্যন্ত করে এবং রিগ্যাল, আখতার হাইটেক ও ডেল্টা ফার্নিচার ১০ শতাংশ করে ছাড় দিচ্ছে।
এ খাতের উপকরণ সরবরাহকারীরাও মেলায় আসছেন। তেমনই একজন মুন্সিগঞ্জের মো. আমানুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘নতুন ডিজাইন দেখতে এসেছি।’ একইভাবে থিনার ও প্রিন্টিং কালি সরবরাহকারী হাসনাইন মুতাকাব্বির বলেন, ‘ডিজাইনে অনেক আধুনিকতা এসেছে, পশ্চিমা ধাঁচের কাজ ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে।’