
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৫ সাল থেকে বিদেশি ঋণ নিয়ে বড় বড় প্রকল্প করা হয়েছে। এসব ঋণের বেশির ভাগই দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে বা সরবরাহকারী ঋণ হিসেবে নেওয়া হয়। এসব ঋণের বিপরীতে এখন বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে, যা অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করছে।
বছরে চার বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে, এটি বেশি মনে হতো না, যদি ওই সব ঋণের সদ্ব্যবহার করতে পারতাম; অর্থনীতিতে যদি গতি থাকত। কিন্তু এসব ঋণের প্রকল্পে অপচয়, তছরুপ ও দুর্নীতি হয়েছে। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চাপের মধ্যে আছে। ওই সব প্রকল্প বাস্তবায়ন করে রপ্তানি আয় যদি বাড়াতে পারতাম, তাহলে ডলার আসত। তখন বিদেশি ঋণ পরিশোধে সমস্যা হতো না। তাই বিদেশি ঋণ পরিশোধ উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভবিষ্যতে ঋণ পরিশোধ আরও উদ্বেগ বাড়াতে পারে। কারণ, বাংলাদেশ এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ। বাংলাদেশকে তুলনামূলক বেশি সুদে বিদেশি ঋণ নিতে হয়। অন্যদিকে উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থার কাছে নমনীয় ঋণ ছাড় কমেছে। যেমন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইতিমধ্যে তাদের ঋণ ছাড় বন্ধ করেছে বা কমিয়ে দিয়েছে।
ভবিষ্যতে বাংলাদেশ বিদেশি ঋণ নিয়ে আরও চাপে পড়বে। স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা উত্তরণের পর বিদেশি সহায়তার উৎস কমে যাবে। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ নিয়ে এর সদ্ব্যবহার করতে পারি, এমন উদাহরণ নেই। এ জন্য দেশের অনেক প্রকল্পের সময় ও খরচ বেড়েছে। ভবিষ্যতে ঋণের সরবরাহের চাপ বাড়বে। আবার ঋণের অর্থ পরিশোধও চাপে থাকবে। বিদেশি ঋণ পরিস্থিতি ধীরে ধীরে অসম্ভব উদ্বেগের জায়গায় যাচ্ছে।