রাজস্ব ভবনে আয়োজিত ভ্যাট দিবসের সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ
রাজস্ব ভবনে আয়োজিত ভ্যাট দিবসের সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ

ধার–অনুদান নিয়ে বেশি দূর যাওয়া যায় না: অর্থ উপদেষ্টা

নিজস্ব আয় না থাকলে ধার করে বা অনুদান নিয়ে বেশি দূর যাওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, নিজস্ব সম্পদ না থাকলে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও উন্নয়ন খাতে সরকার কাজ করবে কীভাবে। ধার করলে কত রকমের সুদ দিতে হয়। আবার খরচের বেলায় স্বাচ্ছন্দ্যও থাকে না।

আজ বুধবার সকালে রাজস্ব ভবনে জাতীয় ভ্যাট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দুঃখজনক বিষয় হলো, অনেক সময় জনগণ ভ্যাট দিলেও তা সরকারি কোষাগারে পৌঁছায় না। সরকারি কোষাগারে যেন তা পৌঁছায়, সে জন্য পদ্ধতি সহজ করতে হবে। ভ্যাট রাজস্ব আয়ের শক্তিশালী আধুনিক পদ্ধতি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ভ্যাটের উপকারিতা

সভাপতির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ভ্যাট চালুর প্রথম দিকে ৯৫ শতাংশ ব্যবসায়ী বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু এই ভ্যাটের মাধ্যমেই সরকারের আয় বেড়েছে। সেটা না হলে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতার মতো অনেক ভাতা চালু করা যেত না।

ছোট ব্যবসায়ীদের ভ্যাট দেওয়ার জন্য আলাদা সফটওয়্যার চালু করা হবে বলে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, সরকারি খরচে এই সফটওয়্যার চালু করা হবে। সেখানে প্রবেশ করে ছোট ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দিতে পারবেন। তাঁদের আলাদা কিছু করতে হবে না। ছোটদের কাছ থেকে ভ্যাট আদায় না করলে বড়দের ওপর চাপ আরও বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জিডিপির তুলনায় কর আদায়ের হার কমে যাওয়ার বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগে জিডিপির তুলনায় কর আদায়ের হার ছিল ১০ শতাংশ; এখন তা ৬ শতাংশে নেমে এসেছে।’ জিডিপির হিসাবের পরিবর্তনের কারণে এই অবনমন হতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘জিডিপির এমন কোনো অংশ থাকতে পারে, যেখানে আমরা পৌঁছাতে পারছি না। এটা নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার। আমাদের কর আহরণ কিন্তু প্রতিবছর বাড়ছে—প্রবৃদ্ধি আছে ১৫ শতাংশ হারে।’ এবার বছর শেষে প্রবৃদ্ধির হার ২০ শতাংশে পৌঁছে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সেমিনারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সচিব ও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।