পুলিশ লোগো
পুলিশ লোগো

ঢাকার ডেমরায় লতিফ বাওয়ানি জুট মিলসের সাড়ে ৬ একর জমি পাচ্ছে পুলিশ

লতিফ বাওয়ানি জুট মিলস লিমিটেডের প্রায় সাড়ে ৬ একর জমি বাংলাদেশ পুলিশ পাচ্ছে। মৌজা মূল্যে পুলিশ যাতে এ জমি কিনে নিতে পারে, সে বিষয়ে একটি প্রস্তাব আজ মঙ্গলবার অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে নীতিগতভাবে অনুমোদন করা হয়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে অন্যান্য উপদেষ্টা এবং বস্ত্র ও পাটসচিব মো. আবদুর রউফ উপস্থিত ছিলেন। অবশ্য উপস্থিত ছিলেন না বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন লতিফ বাওয়ানি জুট মিলসের এ জমির মালিক বর্তমানে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি)। জমির অবস্থান ঢাকা জেলার ডেমরা থানার কায়েতপাড়া মৌজায়। জমির পরিমাণ ৬ দশমিক ৪৮৫ একর।

সূত্রগুলো জানায়, নদীর কাছাকাছি এ জমিতে বাংলাদেশ পুলিশ লজিস্টিক সেন্টার তৈরি করবে। বিশেষ করে নৌ পুলিশ ব্যবহার করবে এ জমি। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অনুমোদনের পর যখন এ জমির নিবন্ধন হবে, তখন নিবন্ধন খরচসহ মোট দাম নির্ধারিত হবে। আপাতত ২৫ কোটি টাকা দাম ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশ পুলিশের কাছে বিক্রির সিদ্ধান্ত না নিয়ে এ জমি কি শিল্পকারখানা স্থাপনের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে না? এমন প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, আলোচ্য জমিটি লতিফ বাওয়ানির মূল কারখানার জমি নয়। কারখানা থেকে বহু দূরে লোকালয়ের ভেতরে এর অবস্থান, যা আবার বেদখল হয়ে আছে। পাশে পুলিশের অন্য স্থাপনা আছে, তাই এ জমিও তাদের কাছেই বিক্রির নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

লতিফ বাওয়ানি জুট মিলস স্থাপিত হয় ১৯৫৩ সালে। ১৯৫৬ সাল এর বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। কারখানার মোট জমির পরিমাণ ৮৩ দশমিক ৪৫ একর। জমি–জমাসংক্রান্ত মামলা রয়েছে ২৫টি।

বিজেএমসির অধীনে থাকা ২৫টি পাটকল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে লতিফ বাওয়ানি জুট মিলস ২০২০ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে। মিলটি একসময় ঢাকা অঞ্চলের সাতটি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের অন্যতম ছিল।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জমি বিক্রি করা অর্থ প্রথমে বিজেএমসিতে যাবে। তারপর তা যাবে অর্থ বিভাগে। অর্থ বিভাগের কাছে এ জুট মিল অনেক টাকা দেনাদার। লতিফ বাওয়ানির জমি এক জায়গায় নয়। এগুলো ঢাকা, কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে।

যোগাযোগ করলে পাটসচিব মো. আবদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, প্রস্তাবটি নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে। এ জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। লতিফ বাওয়ানির অন্য জমির সদ্ব্যবহার করা নিয়েও চিন্তা করা হচ্ছে।

এর আগে গত ৮ জুলাই নরসিংদী জেলার সদর থানার হাজীপুর মৌজায় লতিফ বাওয়ানি জুট মিলসের প্রায় ৩ দশমিক ৪৫ একর জমি বিক্রির প্রস্তাবও নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছিল অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি।

সরকারি জমি কোনো সংস্থাকে আর প্রতীকী মূল্যে দেওয়া হবে না বলে ২৯ জুলাই অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ মন্তব্য করেন। ওই দিন তিনি বলেন, কোনো সংস্থা এ ধরনের জমি নিতে চাইলে যথাযথ মূল্য দিয়ে নিতে হবে। বাজার মূল্যের পরিবর্তে মৌজা মূল্যে বিক্রি করা যাবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য অর্থ উপদেষ্টা সেদিন কোনো মন্তব্য করেননি।