তিন মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত
খোলাবাজারে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে পরিদর্শন অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল ২২টি মানি চেঞ্জার পরিদর্শন করেছেন কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে এই অভিযানে যুক্ত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই) কর্মকর্তারাও।
এদিকে নিয়ম না মেনে ব্যবসা করায় রাজধানীর তিনটি মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। লাইসেন্স স্থগিত হওয়া প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো বিসমিল্লাহ মানি চেঞ্জার, অঙ্কন মানি চেঞ্জার ও ফয়েজ মানি চেঞ্জার। এ ছাড়া আরও একাধিক অবৈধ মানি চেঞ্জারের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
গতকাল রোববার খোলাবাজারে প্রতি ডলার ১০৮ টাকা থেকে ১০৯ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। যা গত বৃহস্পতিবারের তুলনায় কিছুটা কম। বৃহস্পতিবার ডলার ১১০ টাকায় কেনাবেচা হয়েছিল।
পাশাপাশি ব্যাংকেও ডলারের চাপ কমে আসার আশা করছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। কারণ, জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে আমদানি ঋণপত্র খোলা কমেছে ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশ। জুন মাসে ঋণপত্র খোলা হয়েছিল ৭৯৬ কোটি ডলারের, জুলাই মাসে যা কমে হয়েছে ৫৪৭ কোটি ডলার। আমদানি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার পর কমেছে ঋণপত্র খোলা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, খোলাবাজারে ডলারের কারসাজি হচ্ছে কি না, তা জানতে বাংলাদেশ ব্যাংক পরিদর্শন অব্যাহত রেখেছে। পরিদর্শনে অনিয়ম পাওয়ায় কয়েকটি মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে।
জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনএসআইয়ের কর্মকর্তারা ধানমন্ডি, পল্টন, মতিঝিল, বনানী এলাকার ২২টি মানি চেঞ্জার পরিদর্শনে যান। এতে দেখা যায়, বেশির ভাগ মানি চেঞ্জার নিয়ম মেনে ব্যবসা পরিচালনা করছে না। আবার কেউ কেউ অবৈধ ব্যবসার সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ব্যাংকের পাশাপাশি খোলাবাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় গত সপ্তাহে মানি চেঞ্জার পরিদর্শন শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণ জানতে ব্যাংকেও পরিদর্শন করে।
ব্যাংকগুলোয় পরিদর্শনে উঠে আসে, অনেক ব্যাংক সীমার বেশি ডলার ধারণ করছে। আবার মুনাফা বাড়াতে বেশি দামে ডলার কিনে আরও বেশি দামে বিক্রি করেছে কিছু ব্যাংক। রপ্তানিকারকদের আয় প্রত্যাবাসন হলেও তা নগদায়ন করেনি। এভাবে সংকট বাড়ানো হয়েছে।
করোনার বড় ধাক্কার পর আমদানির বাইরেও বৈধ পথে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ বেড়ে গেছে। করোনার ধাক্কা কাটার পর বিদেশে ঘোরাঘুরিও বেড়েছে, এতে বেড়েছে ভ্রমণ খরচ। আবার বিদেশে চিকিৎসা ও শিক্ষার পেছনেও খরচ বেড়েছে। ফলে এসব খাতে ডলার খরচ বেড়ে গেছে। ফলে ২০২০-২১ অর্থবছরে এসব খাতে বাংলাদেশের যে ডলার খরচ হয়েছিল, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে তার চেয়ে ৩৩ শতাংশ বেশি ডলার খরচ হয়েছে। এই হিসাব জুলাই-মে সময়ের।
এদিকে দেশে জ্বালানি তেল ও ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে সার্বিকভাবে আমদানি খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় ডলারের ওপর চাপ পড়েছে। আবার রপ্তানি বাড়লেও তা আমদানির মতো নয়। প্রবাসী আয়ও বাড়েনি, বরং কমেছে। ফলে দেশে ডলারের সংকট তৈরি হয়েছে। এতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে আন্তর্জাতিক লেনদেনে ব্যবহৃত প্রধান এ মুদ্রার দাম।
ডলারের ওপর চাপ কমাতে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বন্ধ করেছে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক ২৭টি পণ্য আমদানিতে ব্যাংকঋণ বন্ধ করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোর খরচ কমাতে গাড়ি কেনা বন্ধসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে কমছে আমদানির চাপ।
আরও পড়ুন
-
স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ক্লাস বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের
-
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ, সব প্রাথমিক বিদ্যালয় ২ মে পর্যন্ত বন্ধ
-
আগামীকালও ঢাকাসহ ২৭ জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করল শিক্ষা মন্ত্রণালয়
-
সামান্য রদবদলে নতুন টেলিযোগাযোগ আইনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন
-
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দ্বিতীয় পালা বন্ধ হচ্ছে, শাখা ক্যাম্পাস হবে আলাদা প্রতিষ্ঠান