
প্রচণ্ড দাবদাহে পুড়ছে দেশ। তাই তৃষ্ণা মেটাতে পানি, ফলের রস ও কোমল পানীয়র পাশাপাশি এখন ডাবের চাহিদা তুঙ্গে। তবে এই চাহিদা বাড়ে বিকেলে। পবিত্র রমজান মাসের কারণে ইফতারের আগে ডাবের দোকানে ক্রেতাদের লম্বা সারি দেখা যায়। চাহিদা ভালো থাকায় সরবরাহে একটু টান পড়েছে, ফলে বেড়েছে ডাবের দাম।
আজ বুধবার রাজধানীর মগবাজার, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার ও নিউমার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ছোট আকারের ডাব বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। মাঝারি মানের ডাবের দাম ৯০ থেকে ১০০ টাকা, আর একটু বড় আকারের ডাব কিনতে গেলে ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা। ছোট আকারের একটা ডাবে এক গ্লাসের মতো পানি পাওয়া পায়। আর মাঝারি ডাবে এক গ্লাসের একটু বেশি, বড় একটা ডাব থেকে পাওয়া যায় দেড় থেকে দুই গ্লাস পানি।
বিক্রেতারা বলেন, রোজার মাঝামাঝি তীব্র গরম পড়া শুরু করলে ডাবের দাম বাড়তে থাকে। তাতে সব ধরনের ডাবের দাম ১০ থেকে ২০ টাকা করে বেড়েছে। তবে দাম বাড়তি থাকলেও ইফতারের আগে অনেকেই ডাব খোঁজেন। রোজার সারা দিন বেচাকেনা কম হলেও বিকেলে সেটা বেশ ভালো হয়। তাই বিক্রেতারা খুশি।
কারওয়ান বাজারের ডাব বিক্রেতা ফরিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজকে প্রতি ১০০টি ডাব কিনেছি সাড়ে ৮ হাজার টাকায়। এর মধ্যে সব আবার এক আকারের হয় না। বেছে বেছে আলাদা করে ৮০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত প্রতিটি ডাব বিক্রি করছি। ইফতারিতে অনেকেই ডাব নিয়ে থাকেন।’
আজ এক ক্রেতা তাঁর কাছ থেকে একসঙ্গে ৫০টি ডাব কেনায় অন্যদিনের চেয়ে বেচাবিক্রি বেশি হবে বলে জানান ফরিদুর রহমান। প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০টি ডাব বিক্রি করেন এই বিক্রেতা।
প্রাকৃতিক পানীয় হিসেবে তো বটেই, রোগীর পথ্য হিসেবেও ডাবের বেশ কদর রয়েছে। সে জন্য রাজধানীর হাসপাতালকেন্দ্রিক ডাবের একটা বড় বাজার আছে। ঋতু পরিবর্তনের ফলে এ সময় জ্বরসহ নানা রোগবালাই দেখা দেয়। এতে ডাবের চাহিদা বাড়ে, কাটতিও বেশি থাকে।
তবে বিক্রেতারা জানান, বাজারে এখন চাহিদার তুলনায় ডাবের সরবরাহ কিছুটা কম, ফলে দাম বেড়েছে।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) হিসাবে, ২০০৯ সালে ঢাকায় একটি ডাবের দাম ছিল ২২ টাকার মতো। সেটা ২০২০ সালে গড়ে ৭৪ টাকায় বিক্রি হয়। সাধারণ সময়ে ঢাকায় একটু বড় আকারের ডাব হলেই দাম চাওয়া হয় কমবেশি ১০০ টাকা। তবে এখন ডাব বিক্রি হচ্ছে এর চেয়ে বেশি দামে।
একাধিক পাইকারি ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকায় ডাবের মূল জোগান আসে লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর ও বাগেরহাট জেলা থেকে। এর মধ্যে ভোলা, লক্ষ্মীপুর আর বাগেরহাটের ডাব রাজধানীতে আসছে বেশি। অন্য জেলা থেকে এখন ডাব খুব বেশি আসছে না। ডাবের দাম বেড়ে যাওয়ার এটিও একটি কারণ।