দেশের প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর শেষ ধাপ পার হলো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ বা সিএসই। আজ মঙ্গলবার সংস্থাটির কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুসংক্রান্ত বিধিবিধান অনুমোদন করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসি বলছে, বিধিবিধান অনুমোদনের ফলে এখন সিএসই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করতে পারবে।
বিএসইসির আজ মঙ্গলবারের কমিশন সভায় কমোডিটি এক্সচেঞ্জ বিধিমালা অনুমোদনের এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভা শেষে বিএসইসির এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিএসইসি জানিয়েছে, বিধিবিধান অনুমোদনের ফলে দেশের পুঁজিবাজারে কমোডিটি ডেরিভেটিভ পণ্য লেনদেন শুরু হবে বলে আশা করা যায়, যা পুঁজিবাজারে বৈচিত্র্য আনতে সহায়তা করবে। কমোডিটি মার্কেট চালুর মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজার ডেরিভেটিভ পণ্যের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে, যা বাজারের জন্য অনন্য মাইলফলক হবে।
এর আগে ২০২০ সালের মার্চে দেশের প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ হিসেবে বিএসইসির কাছ থেকে নিবন্ধন সনদ পেয়েছিল সিএসই। বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে সিএসইকে ওই সনদ তুলে দেন। দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের মধ্যে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর প্রথম উদ্যোগ নেয় সিএসই। সে অনুযায়ী ২০২১ সালের অক্টোবরে সিএসইকে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে শর্ত সাপেক্ষে প্রাথমিক সম্মতি জ্ঞাপন করে বিএসইসি। প্রাথমিক সম্মতি পাওয়ার প্রায় আড়াই বছর পর কমোডিটি এক্সচেঞ্জের সনদ পায় সিএসই। আর সেই সনদ পাওয়ার প্রায় এক বছরের মাথায় এসে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ পরিচালনা–সংক্রান্ত বিধিবিধান অনুমোদন করেছে বিএসইসি।
কমোডিটি এক্সচেঞ্জ হচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে বিভিন্ন ধরনের পণ্য কেনাবেচার সুযোগ থাকবে। তবে সেসব পণ্য সরাসরি নয়, কাগুজে বা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে কেনাবেচা হবে। আর মূল পণ্যটি থাকবে কোনো গুদামে বা মাঠে। সেখান থেকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর এটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি বা হস্তান্তর হবে।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করতে সিএসইর সঙ্গে পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছে ভারতের মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ (এমসিএক্স)। সিএসই সূত্রে জানা যায়, নতুন কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করতে সব মিলিয়ে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার মতো বিনিয়োগ করবে সংস্থাটি। সিএসইর সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
দেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য ২০০৭ সালে সরকারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে পরবর্তী সময়ে সরকারের এ উদ্যোগ গতি হারায়। ২০১৭ সালের আগস্টে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার আগ্রহ প্রকাশ করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে চিঠি দেয় সিএসই। মন্ত্রণালয় থেকে পরে তা বিএসইসিতে পাঠানো হয়। আর ২০২০ সালে বিএসইসির নেতৃত্ব বদলের পর কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর বিষয়ে আবারও কার্যক্রম শুরু হয়, যা এখন কার্যকর হলো।