Thank you for trying Sticky AMP!!

সঞ্চয়পত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ করার আগে করণীয়

সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যেকোনো সময়ই ব্যাংক, সঞ্চয় ব্যুরো বা ডাকঘরে গিয়ে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারেন। জাতীয় পরিচয়পত্র, কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) এবং নিজের ও নমিনির ছবি নিয়ে গেলে আর কিছু লাগে না।

সাধারণ বিনিয়োগকারীদের তুলনায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বাড়তি কিছু কাগজপত্র লাগে। কী কী লাগে, সেগুলো তুলে ধরে নতুন একটি নীতিমালা জারি করেছে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর। বিভিন্ন কোম্পানি; ভবিষ্য তহবিলের অর্থ; মৎস্য, পোলট্রি ও কৃষি ফার্ম এবং অটিস্টিকদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান—এই চার ক্ষেত্রের বিনিয়োগকারীদের কথা বিবেচনায় রেখে ৮ নভেম্বর নীতিমালাটি করা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে প্রধান কার্যালয় থেকে বিভাগীয় কার্যালয়গুলোতে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

সঞ্চয়পত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ সংকুচিত করতে গত মে মাসে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)। এতে বলা হয়, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র শুধু জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের অধীন সঞ্চয় ব্যুরোর মাধ্যমে পরিচালিত হবে। এর ফলে পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্র তফসিলি ব্যাংকের শাখা বা ডাকঘর থেকে আর কেনা যাচ্ছে না।

কোম্পানি

কোম্পানিগুলো ভবিষ্য তহবিলের (প্রভিডেন্ট ফান্ড) অর্থ দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনে থাকে। কোনো কোম্পানি যদি ওই তহবিলের অর্থ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে চায়, প্রথমেই তাকে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি) থেকে কোম্পানি হওয়ার প্রমাণক বা সার্টিফিকেট অব ইনকরপোরেশন সংগ্রহ করতে হবে। বিনিয়োগ করার বিষয়ে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকের কার্যবিবরণীর কপি এবং সঞ্চয়পত্র কেনার আবেদনপত্রে স্বাক্ষরকারী অন্তত দুজন কর্মকর্তার নাম ও পদবি উল্লেখ করতে হবে। আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী কর কমিশনারের কাছ থেকে ভবিষ্য তহবিলের স্বীকৃতি সংগ্রহ করতে হবে। ভবিষ্য তহবিলের নামে টিআইএন ও ব্যাংক হিসাবের বিবরণীও থাকতে হবে।

জানা গেছে, ভবিষ্য তহবিলের অর্থ ব্যাপকভাবে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ হয়ে আসছিল বলে কর কমিশনারের কাছ থেকে প্রত্যয়ন নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কর কমিশনারই নিশ্চিত করবেন যে ওই অর্থ কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের ভবিষ্য তহবিলের অর্থ।

অন্যান্য প্রতিষ্ঠান

ভবিষ্য তহবিল আইন–১৯২৫ অনুযায়ী, পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীদের ভবিষ্য তহবিল সংরক্ষণ বিষয়ে সরকারি আদেশ অর্থাৎ গেজেট বা প্রজ্ঞাপনের কপি লাগবে। চাকরিজীবীদের পে-রোলের এক মাসের কপি, ব্যাংক হিসাব বিবরণী ও টিআইএন লাগবে। এ ক্ষেত্রেও পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকের কার্যবিবরণীর কপি এবং সঞ্চয়পত্র কেনার আবেদনপত্রে স্বাক্ষরকারী অন্তত দুজন কর্মকর্তার নাম ও পদবি উল্লেখ করতে হবে।

মৎস্য, পোলট্রি ও কৃষি ফার্ম

এ খাতের পক্ষ থেকে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের আগে উপকর কমিশনারের প্রত্যয়নপত্র, আয়কর কার্যালয়ে দাখিল করা আয় বিবরণীর কপি, ফার্মের টিআইএন নম্বর, ফার্মের ব্যাংক হিসাবের বিবরণী ও চেকের ফটোকপি এবং ফার্মের স্বত্বাধিকারীর ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হবে।

২০১৯ সালের ২ জুলাই থেকে হাঁস-মুরগির মাংস, পোলট্রি ফিড, বীজ উৎপাদন, স্থানীয়ভাবে উত্পাদিত বীজ, গবাদিপশু বিপণন, কৃষিকাজ, দুগ্ধ খামার, উদ্যান পালন, ব্যাঙ চাষ, মাশরুম চাষ, রেশম চাষ, ফুল চাষে আয়ের অর্থ দিয়ে পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে বলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

অটিস্টিকদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে হলে প্রতিষ্ঠানটি অটিস্টিকদের শিক্ষা বা সহায়তার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মর্মে জেলা সমাজসেবা কার্যালয় এবং স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের প্রত্যয়ন লাগবে।

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা অর্থের মুনাফা অটিস্টিকদের সহায়তায় ব্যয় করা হবে মর্মে জেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে প্রত্যয়নপত্র নিতে হবে। প্রতিষ্ঠানের টিআইএন এবং তহবিলের ব্যাংক হিসাবের বিবরণী ও চেকের ফটোকপি লাগবে। এ ছাড়া সঞ্চয়পত্রের হিসাব পরিচালনকারী কমপক্ষে দুজনের নাম, পদবি, ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রে কপি লাগবে।

যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অটিস্টিকদের জন্য গড়ে উঠেছে, সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক তিন বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারবে বলে প্রথমবারের মতো সুযোগ দেওয়া হয় গত বছরের ২৫ নভেম্বর। এর আগে কোনো প্রতিষ্ঠান এই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারত না।