Thank you for trying Sticky AMP!!

ঐতিহাসিক করপোরেট কর চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন ক্ষমতাধর নেতারা

আন্তর্জাতিক ন্যূনতম করপোরেট কর চুক্তির বিষয়ে একমত হয়েছেন বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশের নেতারা।

আন্তর্জাতিক ন্যূনতম করপোরেট কর চুক্তির বিষয়ে একমত হয়েছেন বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশের নেতারা। গতকাল শনিবার রোমে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে যোগদানকারী সব নেতা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ওপর বিশ্বের সর্বত্র ন্যূনতম ১৫ শতাংশ করপোরেট কর আদায়ে সম্মত হয়েছেন। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এবারের সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন ও কোভিড মহামারিবিষয়ক আলোচনাও প্রাধান্য পেয়েছে।

আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত জি-২০ জোট। এবারের সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন।

যুক্তরাষ্ট্র প্রথম এই কর চুক্তির প্রস্তাব করে। আজ রোববার এটি আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২৩ সাল থেকে এটি বাস্তবায়ন হতে পারে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

করপোরেট করারোপের এ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তকে বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন। এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং কর্মীরা এর মাধ্যমে উপকৃত হবেন। যদিও এটি বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বড় বড় কোম্পানিগুলোর কর বেশি দেওয়া লাগবে।’

জি-২০ সম্মেলনের পরই যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দেবেন বিশ্বনেতারা। এ কারণে চলমান জি-২০ সম্মেলনকে জলবায়ু ইস্যুতেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।

গত জুনে অনুষ্ঠিত বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোর জোট জি-৭-এর অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ওপর বিশ্বের সর্বত্র ন্যূনতম ১৫ শতাংশ করপোরেট কর নির্ধারণের বিষয়ে একটি চুক্তিতে সম্মত হন অর্থমন্ত্রীরা। জি-৭-এর সদস্যদেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা, ইতালি ও জাপান ওই চুক্তিতে সম্মতি দেয়।

বহুজাতিকেরা এক জায়গায় ব্যবসা করে আর আরেক জায়গায় মুনাফা দেখায়, এই ফাঁকিবাজি বন্ধ করার জন্য অনেক দিন ধরেই চেষ্টা চলছে। বৈশ্বিক অর্থনীতি ডিজিটাইজড হওয়ার কারণে এই ফাঁকিবাজির পরিসর দিন দিন আরও বড় হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, করপোরেট কোম্পানিগুলো অস্থাবর সম্পত্তির নিবন্ধন করছে ট্যাক্স হেভেন বা যেখানে করহার খুব কম, তেমন দেশগুলোতে। ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, কোনো দেশে করপোরেট করহার ১ শতাংশ হ্রাস করার অর্থ হলো, কর-পূর্ব মুনাফা ১ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস করা। এই হার দিনের পর দিন শুধু বাড়ছে। বিভিন্ন দেশ এই পলায়নরত মুনাফা হাত করতে করহার কেবল কমাচ্ছে।

এই টাকা পাচারের কারণে উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলো রাজস্ব হারাচ্ছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ওপর যে ন্যূনতম ১৫ শতাংশ করারোপ করা হয়েছে, তাতে এই কোম্পানিগুলোর ট্যাক্স হেভেনে টাকা পাচার করার প্রবণতা কিছুটা কমবে। আর বহুজাতিকদের ব্যবসাস্থলে করারোপ করার যে অধিকার দেশগুলোর হাতে আসছে, তাতে যা ঘটবে তা হলো করের ভিত্তি নিয়ে জালিয়াতি করার ক্ষমতা বহুজাতিকদের কমবে।