
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) পদে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ দিয়েছেন গত বছর প্রথম স্থান অধিকারী মো. মাজহারুল হাসান নাহিদ।
সহকারী পরিচালক পদে চাকরি পেতে লিখিত পরীক্ষায় ভালো নম্বর অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত মোট নম্বরের ভিত্তিতেই চাকরি নিশ্চিত হয়। পাশাপাশি মেধাক্রম এই চাকরির পদোন্নতিতেও ভূমিকা রাখে। তাই লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সর্বোচ্চ মনোযোগ দেওয়া আবশ্যক। আগের প্রশ্নগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায় লিখিত পরীক্ষায় মোট ৮০ নম্বরের প্রশ্ন থাকে।
বাংলাদেশ বিষয়াবলি
লিখিত পরীক্ষায় বাংলাদেশ অংশ থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু বিদ্যুৎসংশ্লিষ্ট সংস্থার চাকরির পরীক্ষা, তাই বর্তমানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের অবস্থা, শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে মানুষের উন্নয়ন, নবায়নযোগ্য শক্তি, পল্লী বিদ্যুতের ভূমিকা এবং সাম্প্রতিক বিষয়াবলি অবশ্যই পড়তে হবে। পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই জুলাই বিপ্লব, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সাম্প্রতিক বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয় সম্পর্কে পড়তে হবে।
আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি
আন্তর্জাতিক অংশ থেকে বেশ কিছু প্রশ্ন হয়ে থাকে। এ অংশের জন্য সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক সমস্যা, যুদ্ধ, মহামারি, ব্লু ইকোনমি, নবায়নযোগ্য শক্তি ও পরিবেশগত ইস্যু খুব মনোযোগসহকারে পড়তে হবে।
গণিত
গণিত অংশে সাধারণত ৩-৪টি প্রশ্ন পরীক্ষায় আসতে পারে। সর্বশেষ সহকারী পরিচালক পরীক্ষার লিখিত পরীক্ষায় গণিত থেকে প্রশ্ন আসেনি। তবে লিখিত প্রস্তুতির জন্য অবশ্যই গণিত অংশের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিতে হবে। গণিত অংশের প্রস্তুতির জন্য পাটিগণিতের ওপর বেশি জোর দিতে হবে। কারণ, পাটিগণিত থেকেই অধিকাংশ প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা থাকে। বীজগণিত, পরিমিতি থেকেও প্রশ্ন আসতে পারে। পাটিগণিতের মধ্যে ধারা, লাভ-ক্ষতি, সরল-যৌগিক, মুনাফা, লসাগু, গসাগু ইত্যাদি ভালো করে দেখতে হবে। বীজগণিত থেকে মান নির্ণয় সূত্র এবং পরিমিতি থেকে বেসিক সূত্রের মাধ্যমে যেসব সমাধান করা যায়, সেগুলো পড়তে হবে।
অনুবাদ
বাংলা থেকে ইংরেজি এবং ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদ লিখিত পরীক্ষার জন্যই গুরুরত্বপূর্ণ। এ পরীক্ষাতেও এ রকম দুটি অনুবাদ আসতে দেখা যায়। অনুবাদে ভালো করতে হলে শুধু কয়েক দিন প্রস্তুতি নিলেই ভালো করা সম্ভব নয়। অনেক দিনের অভ্যাস আপনাকে অনুবাদে ভালো করতে সাহায্য করবে। অনুবাদের জন্য বুঝে বুঝে ইংরেজি এবং বাংলা পত্রিকা পড়তে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় একটি পত্রিকার একই সঙ্গে বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন পড়া।
শর্ট নোট
পরীক্ষায় ৪ থেকে ৫টি শর্ট নোট আসে। বাংলা বা ইংরেজি দুইভাবেই আসতে পারে। বাংলায় প্রশ্ন এলে বাংলায় উত্তর দিতে হবে আর ইংরেজিতে এলে উত্তর দিতে হবে ইংরেজিতে। এসব শর্ট নোটে অবশ্যই জুলাই বিপ্লব, অর্থনীতি ও বিদ্যুৎ খাত, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সাম্প্রতিক বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। শর্ট নোট প্রশ্নে তথ্য সংক্ষেপে ও স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করতে হবে।
লিখিত পরীক্ষায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সময় ম্যানেজ করে সব উত্তর করা। সময় বাঁচিয়ে সঠিক ও তথ্যসমৃদ্ধ উত্তর দেওয়ার দক্ষতা রপ্ত করতে হবে। উত্তরগুলো যতটা সম্ভব সুন্দর ও গোছানোভাবে উপস্থাপন করতে হবে। ভুল এড়ানো ও সুস্পষ্ট তথ্য প্রদানের মাধ্যমেই ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব। লিখিত পরীক্ষায় সফলতার জন্য প্রয়োজন নিয়মিত অনুশীলন, সঠিক প্রস্তুতি ও আত্মবিশ্বাস।