Thank you for trying Sticky AMP!!

এইচএসসি ২০২২ - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র | অধ্যায় ১ : সৃজনশীল প্রশ্ন

অধ্যায় ১

সৃজনশীল প্রশ্ন

আকাশ ও মামুন দুই বন্ধুর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নাম ‘সবুজ পৃথিবী’। এ প্রতিষ্ঠানে তাঁরা বীজ থেকে চারা উৎপাদন করেন। প্রতিষ্ঠানটিতে ফুল, ফলসহ বিভিন্ন ধরনের চারা উৎপাদন করা হয়। তাঁরা সাধারণ মানুষ ও ক্রেতাদের কল্যাণের বিষয়টি মাথায় রেখে কম দামে চারার মূল্য নির্ধারণ করেন।

বিক্রি ভালো হওয়ায় ২০২০ সালে তাঁদের প্রতিষ্ঠানটি দুই লাখ টাকা মুনাফা অর্জন করে। কিন্তু তাঁরা অর্জিত এ মুনাফা নিজেদের মধ্যে বণ্টন না করে মানুষের কল্যাণ ও তাঁদের টেকসই উন্নতির লক্ষ্যে তা দিয়ে বিদেশ থেকে আবার নতুন করে আরও বিভিন্ন জাতের বীজ ক্রয় করেন।

প্রশ্ন

ক. পর্যায়িতকরণ কী?

খ. পুনঃ রপ্তানি বাণিজ্যের ধারণাটি ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকে ‘সবুজ পৃথিবী’ নামক প্রতিষ্ঠাটির কর্মকাণ্ড কোন শিল্পের অন্তর্গত? বর্ণনা করো।

ঘ. উদ্দীপকের ‘সবুজ পৃথিবী’ নামক প্রতিষ্ঠানটির কাজকে কী সামাজিক ব্যবসা বলা যায়? যুক্তিসহ মতামত দাও।

উত্তর

ক. পূর্বনির্ধারিত মান অনুযায়ী পণ্যকে বিভিন্নভাবে সাজানো বা ভাগ করাকে পর্যায়িতকরণ বলে।

খ. সাধারণভাবে আমদানিকৃত পণ্য অন্য দেশে রপ্তানি বা বিক্রয় করাকে পুনঃ রপ্তানি বলে। এ ক্ষেত্রে রপ্তানিকারক সুবিধাজনক কোনো দেশ থেকে প্রথমে পণ্য আমদানি করেন। এরপর ওই পণ্য সরাসরি অন্য দেশে রপ্তানি করেন।

অর্থাৎ যখন পণ্যসামগ্রী নিজ দেশে ভোগ বা ব্যবহারের জন্য না এনে তৃতীয় কোনো দেশে রপ্তানির জন্য আমদানি করা হয়, তখন তা পুনঃ রপ্তানি নামে পরিচিত হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বাংলাদেশের কোনো ব্যবসায়ী যদি ভারত থেকে চাল আমদানি করে তা আবার মধ্যপ্রাচ্যে পাঠায় তখন সেটা পুনঃ রপ্তানি বাণিজ্য বলে বিবেচিত হবে।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘সবুজ পৃথিবী’ নামক প্রতিষ্ঠানটির কর্মকাণ্ড প্রজননশিল্পের অন্তর্গত। যে শিল্পের মাধ্যমে গাছপালা ও প্রাণীর বংশ বৃদ্ধি করা হয়, তাকে প্রজনন শিল্প বলে।

এ ধরনের শিল্পে মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্য গাছপালা ও প্রাণীর বংশ বৃদ্ধি ও পুনরুৎপাদন করে তা বিক্রয় করে থাকে। উদ্দীপকের উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানটি যেহেতু বীজ থেকে চারা উৎপাদনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, সেহেতু এর কর্মকাণ্ড প্রজননশিল্পের অন্তর্গত। বীজ ও নার্সারি ফার্ম, পোলট্রি ফার্ম, মৎস্য খামার প্রভৃতি এরূপ শিল্পের উদাহরণ। সুতরাং ‘সবুজ পৃথিবী’ নামক প্রতিষ্ঠানটি প্রজননশিল্পের অন্তর্গত।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘সবুজ পৃথিবী’ নামক প্রতিষ্ঠানটিকে সামাজিক ব্যবসা বলা যায়।

যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করতে ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ মূলধন বিনিয়োগ করেন, কিন্তু তার পেছনে মুনাফা বা লভ্যাংশপ্রাপ্তির কোনো উদ্দেশ্য থাকে না বরং সামাজিক কল্যাণ ও দারিদ্র্য দূরীকরণের উদ্দেশ্যই থাকে মুখ্য, তাকে সামাজিক ব্যবসা বলে। সামাজিক সমস্যাসমূহকে চিহ্নিত করে ব্যবসায় পরিচালনার মাধ্যমে সমাজের দরিদ্র ও অবহেলিত মানুষের টেকসই উন্নতি নিশ্চিত করাই এর অন্যতম উদ্দেশ্য। এ ব্যবসা হলো এমন একটি ব্যবসার পদ্ধতি, যেখানে বিনিয়োগকারী তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ব্যতীত কোনো অতিরিক্ত অর্থ মুনাফা হিসেবে ভোগ করতে পারবে না। তবে ব্যবসার পরিচালনায় অংশগ্রহণ করলে পারিশ্রমিক হিসেবে বেতন পেয়ে থাকেন।

উদ্দীপকে দেখা যায়, সবুজ পৃথিবী নামক প্রতিষ্ঠানটি বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে, যা প্রজননশিল্পের অন্তর্গত। প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালে চারা বিক্রি ভালো হওয়ায় দুই লক্ষ টাকা মুনাফা অর্জন করে, যা মালিকদের মধ্যে বণ্টন না করে বরং ব্যবসায় সম্প্রসারণের উদ্দেশে মুনাফার অংশ দিয়ে অতিরিক্ত বীজ ক্রয় করে।

তা ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি মুনাফা অর্জনকে বিশেষ গুরুত্ব না দিয়ে সমাজের ক্রেতাদের কথা বিবেচনা করে চারার কম মূল্য নির্ধারণ করে, যা সামাজিক ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

যেহেতু উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি অর্জিত মুনাফা মালিকদের মধ্যে বণ্টন না করে বরং সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের টেকসই উন্নতির জন্যে মুনাফা দিয়ে ব্যবসায় সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করে, তাই এটিকে একটি সামাজিক ব্যবসা বলা যায়।

মো. মাজেদুল হক খান, সহকারী অধ্যাপক, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা

পরবর্তী সৃজনশীল প্রশ্ন

পূর্ববর্তী দিনের পড়া