অস্ট্রেলিয়ার জন্য বাংলাদেশ এখন ‘অ্যাসেসমেন্ট লেভেল-১ দেশ’

ম্যাক্সিমাস এডুকেশন অ্যান্ড মাইগ্রেশন শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের নির্ভরযোগ্য পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করছে
ছবি: ম্যাক্সিমাস এডুকেশনের সৌজন্যে

অস্ট্রেলিয়ার সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে বাংলাদেশকে স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিংয়ের ক্ষেত্রে ‘অ্যাসেসমেন্ট লেভেল-১’–এ উন্নীত করা হয়েছে। যা দেশের আন্তর্জাতিক শিক্ষা অগ্রযাত্রায় এক ঐতিহাসিক মাইলফলক। এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক পর্যায়ে বিশ্বাসযোগ্য ও সক্ষম আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে স্বীকৃতির প্রতিফলন।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সহজতর প্রক্রিয়া, বাড়তি সুযোগ

এই স্বীকৃতির ফলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা এখন থেকে আরও দ্রুত ও সহজ প্রক্রিয়ায় অস্ট্রেলিয়ান স্টুডেন্ট ভিসার সুবিধা নিতে পারবে। দীর্ঘ আর্থিক যাচাই, অপ্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও জটিল প্রমাণপত্রের প্রয়োজন অনেকটাই কমে যাবে। ফলে শিক্ষার্থীরা অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটে আরও সহজে ভর্তি হতে পারবে।

পাশাপাশি বাংলাদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এজেন্টদের জন্যও এটি একটি সুযোগ অস্ট্রেলিয়ান প্রোভাইডারদের সঙ্গে নতুন অংশীদারিত্ব ও একাডেমিক সহযোগিতা গড়ে তোলার। বর্তমানে ব্যবসা, আইটি, ইঞ্জিনিয়ারিং, নার্সিং, হসপিটালিটি ছাড়াও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ডেটা অ্যানালিটিক্স ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির মতো উদীয়মান সেক্টরগুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

লুকানো ঝুঁকি ও নতুন চ্যালেঞ্জ

এই সুযোগের সঙ্গে কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। অ্যাসেসমেন্ট লেভেল কমে যাওয়া মানে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই কিছুটা সহজ হয়েছে। যা কিছু অসাধু এজেন্ট বা ভুয়া পরামর্শদাতাদের জন্য সুযোগ তৈরি করে। ইতিমধ্যেই কিছু অনিবন্ধিত ব্যক্তি গ্যারান্টিড ভিসা, ফ্রি অ্যাডমিশন বা ডিসকাউন্ট কোর্সের প্রলোভন দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করছে। এসব বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন থাকতে হবে।

অস্ট্রেলিয়ার সরকার এখনো ভিসার সততা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করে থাকে জেনুইন স্টুডেন্ট (জিএস) টেস্ট ও ভর্তি-পরবর্তী মনিটরিংয়ের মাধ্যমে। যদি কেউ ভুয়া ব্যাংক স্টেটমেন্ট, জাল একাডেমিক ডকুমেন্ট বা বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়, তবে ‘পাবলিক ইন্টারেস্ট ক্রাইটেরিয়ন (পিআইসি)-৪০২০ অনুযায়ী ভিসা বাতিল ও দীর্ঘমেয়াদি নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে পারে।

শিক্ষার্থীদের জন্য সতর্কবার্তা

এক্ষেত্রে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের এখন আরও সচেতন হওয়া জরুরি। তাঁদের করণীয়—আবেদন করতে হবে শুধু এমএআরএ বা পিআইইআর–স্বীকৃত নিবন্ধিত শিক্ষা ও মাইগ্রেশন এজেন্সির মাধ্যমে। ভর্তি নিশ্চিতকরণপত্র ও প্রোভাইডারের সিআরআইসিওএস রেজিস্ট্রেশন যাচাই না করে কোনো অর্থ প্রদান করা যাবে না। ‘গ্যারান্টিড ভিসা’ বা অবাস্তব কম খরচের প্রতিশ্রুতি দেওয়া এজেন্টদের থেকে দূরে থাকতে হবে। অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছে নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকা ও ভিসার শর্ত মানা বাধ্যতামূলক। সব লেনদেন ও যোগাযোগের রসিদ ও ইমেল সংরক্ষণ করা উচিত।

দায়িত্বশীল পথচলা: বিশ্বাস রক্ষার অঙ্গীকার

‘বাংলাদেশের অ্যাসেসমেন্ট লেভেল-১’ মর্যাদা নিঃসন্দেহে জাতীয় গর্বের বিষয়। তবে এই মর্যাদা টিকিয়ে রাখতে সবার দায়িত্বশীল আচরণ অপরিহার্য। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষা প্রতিনিধি—সবাইকে স্বচ্ছতা, সততা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে। যদি সুযোগটির অপব্যবহার হয়, তবে এ সুবিধা দ্রুত বাতিল হতে পারে, যার প্রভাব পড়বে হাজারো শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতের ওপর।

ম্যাক্সিমাস এডুকেশন অ্যান্ড মাইগ্রেশন শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের নির্ভরযোগ্য পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য কেবল বিদেশে ভর্তি নয়, বরং প্রতিটি শিক্ষার্থীর একাডেমিক, নৈতিক ও বৈশ্বিক সফলতা নিশ্চিত করা।