Thank you for trying Sticky AMP!!

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির মেয়াদ শেষ, নির্বাচন কবে?

মিশা সওদাগর, রিয়াজ, পপি, ফেরদৌস

শপথ নেওয়ার পর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির মেয়াদ দুই বছর পার হয়ে গেল মে মাসে। নিয়ম অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন অনুষ্ঠান করে নতুন কমিটির কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হয়। সেই তিন মাসও পার হয়ে গেছে, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমান কমিটির সহসভাপতি চিত্রনায়ক রিয়াজ তো সরাসরি বললেন, এই কমিটি এখন অবৈধ। আর কার্যনির্বাহী সদস্য ফেরদৌস, পপি ছাড়াও চলচ্চিত্র তারকাদের অনেকে অবৈধ কমিটি প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিব্রতবোধ করেন। ফেরদৌস বলেন, খুব অস্বস্তি হচ্ছে এই কমিটি নিয়ে ভাবতে।

সমিতির গঠনতন্ত্রের ৮ অনুচ্ছেদের (চ)-এ বলা আছে, পূর্ববর্তী কার্যকরী পরিষদের মেয়াদান্তে অতিরিক্ত ৯০ দিনের মধ্যে অবশ্যই নির্বাচন হতে হবে। সেই হিসেবে ২৪ আগস্টের মধ্যে ২০১৯-২০ মৌসুমের নির্বাচন শেষ করা বাধ্যতামূলক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। ফেসবুকেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে দেশে থাকলেও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের কাছে তফসিল ঘোষণা ও নির্বাচনের বিষয়ে জানার জন্য বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি, এসএমএসেও উত্তর দেননি। ভাইবার এবং হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করলেও এবং এসএমএস দিলে ‘সিন’ করার পরও উত্তর দেননি।

বর্তমান কমিটির সহসভাপতি ও চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেন, ‘সময় যেহেতু শেষ, এখন কমিটি অবৈধ। কেন যেন মনে হচ্ছে, এই কমিটি নিয়ে একধরনের সার্কাস হচ্ছে। কী বলব, কিছুই বুঝতে পারছি না।’

রিয়াজ এ-ও বলেন, ‘যে আশা আর স্বপ্ন নিয়ে আমরা শুরু করেছিলাম, প্রথম এক বছরে তার অনেক কিছু অর্জনও করেছিলাম। এরপর কমিটির এক-দুজন সদস্যের কারণে বর্তমান কমিটিকে সমালোচিত হতে হয়। সর্বশেষ মিটিংয়ে তফসিল ঘোষণার তারিখও নির্ধারণ করা হয়েছিল। দুঃখজনক হলেও সত্য এখনো ঘোষণা হয়নি। এজিএমের তারিখও ঠিক করা হয়। কিন্তু এজিএম হয়নি। পরে জানতে পেরেছি, এজিএমের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে।’

রিয়াজের সঙ্গে একমত পোষণ করেন কার্যনির্বাহী সদস্য ও চিত্রনায়িকা পপি। তিনি বলেন, ‘কমিটির মধ্যে দু-একজন সুযোগসন্ধানী সদস্য ছিলেন, যাঁরা সাধারণ মানুষের কাছে চলচ্চিত্রের সবার সম্পর্কে নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করেছেন। সংগঠনকে একটা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন।’

সভাপতি দেশের বাইরে থাকায় কি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা সম্ভব হচ্ছে না? এমন প্রশ্নে রিয়াজ বলেন, ‘তা হবে কেন? আমি তো সহসভাপতি। পদাধিকারবলে আমারও সেই অধিকার আছে। শিল্পী সমিতির অনেকেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। সবার কথা ভেবে খুব শিগগির সভা আহ্বান করে সামগ্রিক বিষয়ে একটা ব্যাখ্যা চাইব সাধারণ সম্পাদকের কাছে।’

কার্যনির্বাহী সদস্য ফেরদৌস বলেন, ‘আমি চাইব খুব শিগগির যথাযথ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন কমিটি সংগঠন পরিচালনা করবে। এটা শুনতে খারাপ লাগবে, কমিটি তার বৈধতা হারিয়ে ফেলেছে। ভীষণ অস্বস্তি হচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ অলাভজনক সংগঠন, যাঁদের সেবা করার মানসিকতা থাকবে, তাঁরাই যেন আসেন।’

২০১৭ সালের ৫ মে শিল্পী সমিতির বর্তমান কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২৪ মে আগের কমিটির কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করে।

‘মেয়াদ যেহেতু শেষ, বর্তমান কমিটির এভাবে জায়গা দখল করে রাখার কোনো কারণ দেখছি না’ বললেন কার্যনির্বাহী পরিষদের আরেক সদস্য চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা। তিনি বলেন, ‘শিল্পীদের কেউ কেউ নতুন করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন শুনেছি, সেই পরিবেশটা তৈরি করার দায়িত্ব এই কমিটির। অবৈধ একটা কমিটির সদস্য এই দায় নিতে আমি রাজি নই।’

সঠিক সময়ে নির্বাচন দিতে না পারায় ২০১৫-১৬ সালে নির্বাচিত কমিটির সমালোচনা করেছিলেন বর্তমান কমিটির সদস্যরা। তাঁরা নির্বাচিত হয়ে একই পথে হাঁটছেন বলে মত দিয়েছেন ওমর সানী। শোনা যাচ্ছে, আগামী নির্বাচনে ওমর সানী প্রার্থী হচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘এই কমিটির মতিগতি কিছুই বুঝতে পারছি না।’

বর্তমান কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক চিত্রনায়ক ইমন গতকাল বুধবার বিকেলে বলেন, ‘তিন দিন আগে এফডিসিতে সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আমার দেখা হয়। তখন তাঁর কাছে নির্বাচনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুব শিগগির তফসিল ঘোষণা হবে। নির্বাচনের তারিখও জানিয়ে দেওয়া হবে।’