
৩০ বছর ধরে প্রমথেশ বড়ুয়ার দেবদাস ছবিটির খোঁজ করছিল দ্য ন্যাশনাল ফিল্ম আর্কাইভ অব ইন্ডিয়া (এনএফএআই)। খুঁজতে খুঁজতে সেই ছবি তারা পেল বাংলাদেশে। বাংলাদেশ ১৯৩৫ সালে নির্মিত সেই চলচ্চিত্রের একটি কপি সম্প্রতি ভারতের জাতীয় ফিল্ম আর্কাইভকে হস্তান্তর করেছে। এর বিনিময়ে ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশ পেয়েছে ১৯১৩ সালে নির্মিত ভারতের প্রথম নির্বাক চলচ্চিত্র দাদাসাহেব ফালকের রাজা হরিশচন্দ্র-এর একটি কপি।
ভারতীয় পত্রিকা টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি সংবাদে এমনটিই জানানো হয়। ওই খবরে এনএফএআইয়ের পরিচালক প্রকাশ মাগড়ুমের উদ্ধৃতিতে বলা হয়, ‘ভারতীয় ফিল্ম আর্কাইভের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। ভারতীয় সংস্কৃতি এবং আমাদের সংগ্রহের জন্য এই চলচ্চিত্র অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
চলচ্চিত্র বিনিময়ের এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে তিন সদস্যের একটি দল বর্তমানে ভারতে আছে। ওই দলের সদস্যরা পুনের এনএফএআই কার্যালয়ে সেখানকার কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই চলচ্চিত্র বিনিময় কার্যক্রমে অংশ নেন।
খবরটির সত্যতা জানতে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মুর্তজা আহমদ এবং ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন এই মুহূর্তে ভারতে অবস্থান করছেন। এ সপ্তাহেই তাঁরা দেশে ফিরবেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, চলচ্চিত্র বিনিময়ের এ তালিকা আরও লম্বা হবে। রাজা হরিশচন্দ্র ছাড়াও বাংলাদেশ আরও ছয়টি দুর্লভ ছবি পেতে পারে ভারতের সংগ্রহশালা থেকে। এই তালিকায় রয়েছে নির্বাক চলচ্চিত্র যুগের ছবি বিশ্বমঙ্গল, ১৯৩১ সালের সবাক চলচ্চিত্র অমর চৌধুরী পরিচালিত জামাইষষ্ঠী, এস সুখদেব পরিচালিত তথ্যচিত্র নাইন মান্থস টু ফ্রিডম, ঋত্বিক ঘটকের দুর্বারগতি পদ্মা, আর্দেশির ইরানি পরিচালিত ১৯৩১ সালে মুক্তি পাওয়া সবাক চলচ্চিত্র আলমআরা এবং ১৯৩৪ সালের ছবি ধ্রুব।
গিরিশচন্দ্র ঘোষের লেখা ধ্রুব ছবির গান লিখেছিলেন এবং সংগীত পরিচালনা করেছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। ছবিতে দেবর্ষি নারদের চরিত্রে অভিনয়ও করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের একজন জানান, তাঁদের কাছে এই ছবির দুটি রিল রয়েছে। ভারতের কাছে পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্রটি চেয়েছে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ। তবে শেষ নাগাদ বাংলাদেশের ঝুলিতে কোন কোন দুর্লভ চলচ্চিত্রের কপি আসছে, তা চূড়ান্তভাবে জানা যাবে ভারতে সফররত বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক বাংলাদেশে ফিরলে।