'মান্না একজনই হয়'
>প্রায় ৪০টি ছবিতে মান্নার স্ট্যান্টম্যান হিসেবে কাজ করেছেন আরমান। মান্নার প্রায় ১০০ ছবিতে তিনি ফাইট ডিরেক্টর ছিলেন। মান্নাকে ঘিরে তাঁর অনেক স্মৃতি। তারই তিনটি প্রথমআলোর পাঠকদের জন্য বললেন আরমান।
ডিসকো ড্যান্সার ছবিতে মান্নার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে একটি দৃশ্যের কথা খুব মনে পড়ে। ছবির খলনায়ক রাজীব নায়িকা চম্পাকে ধরে মাটি থেকে প্রায় দুই হাজার ফুট উঁচুতে তার দিয়ে ঝুলিয়ে রাখেন, দুই পাহাড়ের মধ্যে। নায়ক এক পাহাড় থেকে তার বেয়ে বেয়ে নায়িকাকে উদ্ধার করবেন। আমি ছিলাম স্ট্যান্টম্যান। কিন্তু মান্না কাজটি করতেই দিলেন না আমাকে। তিনি নিজেই ওই উচ্চতায় উঠে তার বেয়ে বেয়ে গিয়ে চম্পাকে উদ্ধার করার দৃশ্যটি করলেন। যখন শটটি চলছিল, তখন খুবই ভয়ের মধ্যে ছিলাম। কোনো দুর্ঘটনা যদি ঘটে!
আরেকবার এফডিসিতে কাসেম মালার প্রেম ছবিতে মান্নার স্ট্যান্টম্যান হিসেবে কাজ করতে গিয়ে আমার পুরো শরীরে আগুন লেগে গিয়েছিল। মাস্তানেরা চম্পার বাড়িতে আগুন লাগায়। নায়ক আগুনে লাফ দিয়ে ঘরের মধ্য থেকে চম্পাকে উদ্ধার করবেন। স্ট্যান্টম্যান হিসেবে মান্নার ডামি দিচ্ছিলাম আমি। ক্যামেরা চলছে। আগুনে লাফ দেওয়ার পরপরই নিচ থেকে একটি শুটিং বোমা ফেটে যায়। আমার পুরো শরীরে আগুন লেগে যায়। মান্নাই হাসপাতালে যাওয়ার সব ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
মান্না মারা যাওয়ার ৮-১০ দিন আগের ঘটনা। ছবির নাম মনে নেই। এফডিসির কড়ইতলায় শুটিং চলছিল। মান্না কবর থেকে মাটি ভেঙে ওমর সানীকে নিয়ে তারের সাহায্যে ওপরে উঠবেন। আমি ছিলাম ওই ছবির ফাইট ডিরেক্টর। মান্না রাজি ছিলেন না শটটি দিতে। আমি রাগারাগি করলে শেষ পর্যন্ত দৃশ্যটি করেন। তারে ঝুলে কবর থেকে মান্না যেভাবে উঠলেন, এক টেকেই দৃশ্য ওকে। সেদিন মান্না বলেছিলেন, দৃশ্যটি করার পর আরও ১০ বছর হিরোগিরি করার আয়ু বেড়ে গেছে তাঁর। পরে শুনেছিলাম, কিছুদিন আগে মান্নার শরীরে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। আমি জানতাম না।
মান্না একজনই হয়। অ্যাকশন হিরো হিসেবে অতুলনীয়। বাংলাদেশের ছবিতে মান্না হয়ে আর কেউ আসবে, আমার মনে হয় না।