
আমির খান ও রিনা দত্ত তখন চুটিয়ে প্রেম করছিলেন। তাঁরা ১৯৮৬ সালে গোপনে বিয়ে করেন। দীর্ঘ ১৬ বছর পর, ২০০২ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ললনটপকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমির খান জানিয়েছেন, কীভাবে পাকিস্তানি ক্রিকেটার জাভেদ মিয়াঁদাদ তাঁর বিয়ের দিনটি ‘বরবাদ’ করে দিয়েছিলেন এবং সেটা তাঁকে মানসিকভাবে কষ্ট দিয়েছিল।
আমির ও রিনা তখন একই পাড়ায় থাকতেন। ধীরে ধীরে ভালোবাসা গড়ে ওঠে তাঁদের মধ্যে। কিন্তু রিনার পরিবার তা মেনে নিতে পারেনি। রিনাকে বলা হয়েছিল, আমিরের সঙ্গে যেন আর দেখা না হয়। পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়েছিল। শেষমেশ একে অন্যকে হারানোর ভয়ে তাঁরা গোপনে কোর্টে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।
তবে ভারতের আইন অনুযায়ী ছেলেকে কমপক্ষে ২১ বছর হতে হয় বিয়ে করার জন্য। তাই আমির ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেন। ১৯৮৬ সালের ১৪ মার্চ ২১-এ পা দেন, কিছুদিন পরই বিয়ে করেন রিনাকে।
দিনটি স্মরণ করে আমির বলেন, ‘বিয়ের পর আমরা ভয় পাচ্ছিলাম বাড়ি ফিরতে। মনে হচ্ছিল, সবাই জিজ্ঞেস করবে, এত দেরি কেন হলো। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে সেদিন ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ছিল। পরিবার এতটাই ব্যস্ত ছিল খেলায়, কেউ খেয়ালই করেনি, আমরা নেই।’
কিন্তু ওই ম্যাচই হয়ে ওঠে আমিরের জীবনের এক হতাশার কারণ। কারণ, সেটিই সেই ম্যাচ, যেখানে শেষ বলে পাকিস্তানের জাভেদ মিয়াঁদাদ ছক্কা হাঁকিয়ে ভারতকে হারিয়েছিলেন।
আমির বলেন, ‘আমি তখনো ম্যাচ দেখছিলাম। জাভেদ মিয়াঁদাদের ছক্কা আমাকে ডিপ্রেশনে পাঠিয়ে দিয়েছিল। একবার ফ্লাইটে তাঁর সঙ্গে দেখা হলে আমি বলি, জাভেদ ভাই, আপনি ঠিক করেননি। আপনি আমার বিয়ে বরবাদ করে দিলেন। উনি অবাক হয়ে বললেন, “কীভাবে?” আমি বলি, সেদিনই আপনি শেষ বলে ছক্কা মেরেছিলেন। আমি ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলাম।’
কয়েক মাস পর পরিবার তাঁদের বিয়ের খবর জানতে পারে। রিনার পরিবার এতে খুবই ভেঙে পড়ে। এমনকি রিনার বাবা এতটাই কষ্ট পান যে হার্ট অ্যাটাক হয় তাঁর।
তবে এই হার্ট অ্যাটাকই একসময় দুই পরিবারকে কাছাকাছি নিয়ে আসে। ধীরে ধীরে রিনার পরিবার আমিরকে মেনে নেয়। পরে আমিরের ছোট বোন ফারহাত বিয়ে করেন রিনার ভাই রাজীবকে। এতে সম্পর্ক আরও গভীর হয়।
আমির ও রিনা দীর্ঘ ১৬ বছর একসঙ্গে ছিলেন। তাঁদের দুই সন্তান—জুনাইদ খান ও ইরা খান।