অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ ‘পঞ্চায়েত’ শুরু থেকেই দর্শকের ভালোবাসা পেয়ে এসেছে। সদ্য মুক্তি পাওয়া চতুর্থ মৌসুমও ব্যতিক্রম নয়। এই সিরিজের হাত ধরে জনপ্রিয়তা পেয়েছে অনেক চরিত্র। তেমনই একজন অভিনেত্রী নীনা গুপ্তা। সিরিজে মঞ্জু দেবীর চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের হৃদয়ে পাকা জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
প্রথম আলোর সঙ্গে সম্প্রতি আলাপচারিতায় বলেন, ‘আজ সারা দেশ আমাকে “পঞ্চায়েত” সিরিজের কারণেই চেনে। শহর-গ্রাম যেখানে যাই, সবাই এই সিরিজের কথা বলেন। সত্যি কথা বলতে, “বাধাই হো” সিনেমার সময়ও এত ভালোবাসা পাইনি।’
সিরিজে নীনা গুপ্তার সঙ্গে আছেন ‘সচিবজি’ চরিত্রে জনপ্রিয় অভিনেতা জিতেন্দ্র কুমার। তাঁর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে নীনা বললেন, ‘“শুভ মঙ্গল জ্যায়দা সাবধান” সিনেমার সময় থেকেই আমাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক। ওই ছবির শুটিংয়ের জন্য বেনারসের একটি হোটেলে প্রায় দেড় মাস একসঙ্গে ছিলাম। আউটডোর শুটিংয়ে সবাই পরিবার হয়ে যায়। সেই আত্মিক সম্পর্ক সিরিজেও ফুটে উঠেছে।’
‘পঞ্চায়েত’ সিরিজে রাজনৈতিক নেত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন নীনা গুপ্তা। বাস্তবে রাজনীতিতে আসার ইচ্ছা আছে কি না, জানতে চাইলে বলেন, ‘কলেজে পড়ার সময় নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলাম। দিল্লি ইউনিভার্সিটির অধীন জানকী দেবী কলেজে পড়তাম। তখন জোর করে দাঁড় করানো হয়েছিল। পরে হুমকি পেয়ে ভয় পেয়ে সরে দাঁড়াই। রাজনীতির প্রস্তাবও পেয়েছি, কিন্তু হাত জোড় করে বলেছি, আমার দ্বারা হবে না। রাজনীতির নোংরা খেলায় আমি পারব না।’
এই অভিনেত্রী মনে করেন, এখন তাঁর দারুণ সময় চলছে। বলেন, ‘ভালো ভালো কাজ করছি। তবে কাউকে ভালো চরিত্রে দেখলে হিংসা হয় বৈকি! মনে হয়, সব ভালো চরিত্র তো আমারই পাওয়া উচিত। তবে সেটা কি হয় (হেসে)!’ এর আগে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছিলেন তিনি। আবার পরিচালনায় আসবেন কি না, জানতে চাইলে বলেন, ‘এখন অভিনয়ের দোকান ভালো চলছে। আপাতত অভিনয়েই মন দিতে চাই।’
কথা প্রসঙ্গে নীনা গুপ্তা বলেন, এখনো তাঁর অনেক কিছু দেওয়া বাকি। খানিক আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘একসময় নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাচ্ছিল। আমি মনে করি, আমাদের দেশের অভিনেত্রীদের উচিত নয় কমেডি আর নেতিবাচক চরিত্র করা। একবার করলে আর রক্ষা নেই। আমিও সেই ফাঁদে পড়েছিলাম। ইন্ডাস্ট্রিতে আমার প্রতি সুবিচার হয়নি।’
আড্ডার এক পর্যায়ে উঠে এল মেয়ে মাসাবা গুপ্তার কথা। তাঁদের সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে নীনা বলেন, ‘লড়াই, ঝগড়া, ভালোবাসা, খুনসুটি,পরচর্চা—সবই আমাদের মধ্যে হয়। ঝগড়া হলে মাসাবা কয়েক দিন কথা বলে না। সবচেয়ে বেশি রাগ হয়, আমি যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ভুলভাল পোস্ট করি! তবে ওর বকাঝকা আমি মেনে নিই। কারণ, মাসাবা আমাকে যতটা চেনে, আমি নিজেকেও ততটা চিনি না।’
গত অক্টোবরে মা হয়েছেন মাসাবা, সেই সুবাদে নীনা হয়েছেন নানি। তবে ‘নানি’ ডাক শুনতে তিনি নারাজ। হেসে বলেন, ‘জীবনের এই নতুন অধ্যায়টা দারুণ উপভোগ করছি। সবাইকে বলে দিয়েছি আমাকে “নানি” নয়, “নীনা” বলেই ডাকতে। আমি মাসাবার মা বলেই নিজেকে ভাবি।’
বয়স নিয়ে নীনার দৃষ্টিভঙ্গিও আলাদা। বলেন, ‘আমি মোটেও মনে করি না বয়স শুধু সংখ্যা। যতই বলি না কেন, বয়স বাড়লে শরীর তার ছাপ রাখে। শরীর তো বুড়িয়ে যায়ই। তাই বয়স মেনে নেওয়া উচিত; তার সঙ্গে মানানসই পোশাক আর আচার-আচরণ করা জরুরি।’