Thank you for trying Sticky AMP!!

সিনেমার বাজেটে ২৫ হাজার পিপিই

শাকিব খান।

কথা ছিল ২৮ মার্চ শুরু হবে শাকিব খান ও মাহি অভিনীত ‘নবাব এলএলবি’ ছবির শুটিং। এর আগে করোনাভাইরাস সংক্রমণে দেশের পরিস্থিতি পাল্টে যায়। বেশির ভাগ মানুষ ঘরবন্দী। এর মধ্যে স্থগিত করা হয় ছবির শুটিংও। শুটিং থেমে গেলেও এই ছবির দেড় কোটি টাকা বাজেটের পুরোটা করোনাভাইরাস থেকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা পোশাক পিপিই বাবদ, স্বল্প আয়ের চলচ্চিত্র প্রোডাকশন বয়, সহকারী প্রোডাকশন বয়সহ অসহায় মানুষের জন্য খরচ করা হবে। এমনটাই জানিয়েছেন ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সেলিব্রিটি প্রোডাকশন।

‘নবাব এলএলবি’ ছবিতে শাকিব খান, মাহি ছাড়া অভিনয় করবেন স্পর্শিয়া। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার জানান, করোনার এই সময়ে আমরা এরই মধ্যে ২৫ হাজার পিপিই এবং ১০০০ প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুত করেছি। সামনে আরও করা হবে। বেশির ভাগ পিপিই ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, আল বারাকা হাসপাতাল এবং সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো বিভিন্ন জায়গায় দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। তিনি বলেন, ‘এই পরিস্থিতে আমরা সিনেমাটির শুটিং করতে পারছি না। পরিস্থিতির উন্নতি হলে তখন ভাবব। দেশে করোনা–আতঙ্কের মধ্যে হাসপাতাল, সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যক্তিগত সুরক্ষার পোশাকের ঘাটতি আছে। পাশাপাশি করোনা–আতঙ্কে দেশের মানুষ গৃহবন্দী থাকার কারণে স্বল্প আয়ের মানুষ বিপদে পড়েছেন। তাই সিনেমার বাজেটের টাকায় এ ধরনের বিপদগ্রস্ত মানুষের পেছনে ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

ঢাকার একটি হাসপাতালে পিপিই হস্তান্তরের সময় ‘নবাব এলএলবি’ ছবির পরিচালক অনন্য মামুন। ছবি: সংগৃহীত

এই প্রযোজক আরও বলেন, ‘পিপিই অনেক হাসপাতাল ও সরকারি বাহিনীকে প্রদান করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও দেওয়া হবে। পাশাপাশি স্বল্প আয়ের অসহায় মানুষের মধ্যে খাদ্যদ্রব্যাদি দেওয়াও শুরু করেছি।’

ছবির পরিচালক অনন্য মামুন জানান, চাল, ডাল, লবণ, ময়দা, পেঁয়াজ, আলু, তেল, ডিম ও সাবান একসঙ্গে করে প্রায় এক হাজার প্যাকেট প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আজ সোমবার প্রায় আড়াই শ প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। সামনের এক সপ্তাহ প্রতিদিনই এই বিতরণ অব্যাহত রাখব আমরা।’

প্রযোজকের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ছবির নায়ক শাকিব খান, বললেন পরিচালক অনন্য মামুন। তিনি বলেন, ‘দেশের পরিস্থিতি যখনই স্বাভাবিক হবে, তখন আমরা শুটিংয়ে যাব। এর আগে দেশের এই সংকটের সময়ে ছবির যে বাজেট রাখা হয়েছিল, ওই অর্থ পুরোটাই ধাপে ধাপে ব্যয় করা হচ্ছে। শাকিব ভাই খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে এতে সমর্থন দিয়েছেন।’

ছবির অভিনয়শিল্পী শাকিব খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের এই সংকটের সময় প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তি উচিত তার কাছের মানুষদের পাশে থাকা।

প্রয়োজনমতো সহায়তা করা। আমি শুরু থেকে করোনা পরিস্থিতির খবর রাখছি। একই সঙ্গে আমার অবস্থান থেকে যা কিছু করার করে যাচ্ছি। এখন যেহেতু দেশের সবচেয়ে সংকটময় সময়, তাই এই সময়ে এই ছবির কোনো অভিনয়শিল্পী, টেকনিশিয়ানরা কোনো টাকা নেননি। এই টাকা করোনার কারণে যাঁরা অহসায় অবস্থায় আছেন, তাঁদের সাহায্যার্থে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। আপাতত যেহেতু দেশের সংকটসময় পরিস্থিতি, এখন সবকিছু বাদ দিয়ে এটা মোকাবিলা নিয়ে ভাবা উচিত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তবেই সিনেমা নিয়ে ভাবা যাবে। বাজেটের টাকায় যা করার উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে, তাতে চিকিৎসক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরাসহ সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছে, এটা সবচেয়ে স্বস্তির। আমি সবাইকে আরেকটি বিষয় বলেছি, সাহায্য যেন কোনো অবস্থায় লোক দেখানো নয়, প্রচারণার মাধ্যম না হয়। মানুষকে যেন নিঃস্বার্থভাবে উপকার করা যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতেও বলেছি।’